পাতা:ভীষণ হত্যা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
দারোগার দপ্তর, ১৫৭ সংখ্যা।

স্থানে সামলেশ্বর নামক মহাদেবের পুরাতন মন্দির এখনও বর্ত্তমান ঐ মন্দিরের সম্মুখে কাল প্রস্তর-নির্ম্মিত একটি বৃহৎ বৃষমূর্ত্তি শুইয়া আছে, উহার সম্মুখের দুইখানি পদ কাটা। কথিত আছে, উহার এইরূপ অবস্থা সেই ভয়ানক কালাপাহাড় কর্ত্তৃক হইয়াছিল। মন্দিরের গাত্রে বর্ত্তমান রুচিবিরুদ্ধ দুই একটি অশ্লীল মূর্ত্তি এখনও দেখিতে পাওয়া যায়। ঐ সকল অশ্লীল মূর্ত্তি পবিত্র দেব মন্দিরের গায়ে যে কেন স্থাপিত হইয়াছিল, তাহার কারণ এখনও অবগত হইতে পারা যায় না। কথিত আছে যে, ভোজরাজ কর্ত্তৃক ঐ মন্দির প্রস্তুত ও তাঁহা কর্ত্তৃকই ঐ সামলেশ্বর মূর্তি স্থাপিত হয়। ঐ মন্দিরের চতুস্পার্শ্বে আম্রবৃক্ষ সকল ও ময়দান ধূ ধূ করিতেছে। পুরুষোত্তম যাত্রীগণের মধ্যে অনেকেই যে ঐ স্থানে গান করিয়া সামলেশ্বর মহাদেব দর্শন ও তাঁহার পূজাদি করিয়া গমন করিতেন, তাহার আর বিন্দুমাত্র সন্দেহ নাই। কিন্তু ঐ মন্দিরের বর্ত্তমান অবস্থা নিতান্ত শোচনীয়, একজন পূজারির হস্তে ঐ মন্দিরের ভার এখন ন্যস্ত আছে; তাঁহার ইচ্ছামত একবার তিনি ঐ স্থানে আগমন করিয়া সামলেশ্বরের পূজা করিয়া মন্দিরের তালা বন্ধ করিয়া চলিয়া যান, তাহার পর যদি কেহ ঐ মূর্ত্তি দর্শন বা পূজা করিবার নিমিত্ত সেই স্থানে আগমন করেন, তাহা হইলে তাহার অদৃষ্টে ঐ মূর্ত্তি দর্শন প্রায়ই ঘটে না। পূজারি ব্রাহ্মণকে প্রায় খুঁজিয়া পাওয়া যায় না।

 এই স্থানের নাম যে কেন দাঁতন হইল, সে বিষয়ে অনেক কিম্বদন্তী আছে। কেহ কহেন, চৈতন্যদেব পুরুষোত্তম গমনকালে ঐ স্থানে দাঁতন করিয়া হস্তমুখাদি প্রক্ষালন করিয়াছিলেন বলিয়া, ঐ স্থান দাঁতন নাম প্রসিদ্ধ হইয়াছে। কেহ কহেন,