পাতা:ভীষণ হত্যা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
দারোগার দপ্তর, ১৫৭ সংখ্যা।

 পাঠকগণের মধ্যে সকলেই অবগত আছেন যে, প্রত্যেক থানার অধীনে যতগুলি গ্রাম আছে, সেই সকল গ্রামের প্রত্যেক চৌকিদারকে সপ্তাহে এক দিবস থানায় আসিয়া উপস্থিত হইতে হয়; ও তাহাদিগের এলাকাভুক্ত স্থানে যে সকল নূতন সংবাদাদি ঘটিয়াছে, তাহার সংবাদ প্রদান করিতে হয় ।

 ঐ চৌকিদারগণের মধ্যস্থিত একজন পুরাতন চৌকিদারের নিকট হইতে অবগত হইতে পারিলাম যে, দাঁতনের প্রায় ৬৷৭ ক্রোশ দূরে একখানি গ্রাম আছে। ঐ গ্রামে কৈলাসচন্দ্র দত্ত নামক এক ব্যক্তি বাস করিত, ও কলিকাতার কোন স্থানে চাকরি করিত। ঐ গ্রামের বিমলাচরণ দত্ত নামক তাহার একজন কুটুম্বের কন্যাকে সে বাহির করিয়া লইয়া যায়। ঐ স্ত্রীলোকটীর যে কি নাম ছিল, তাহা সে বলিতে পারে না, কিন্তু সেই সময় হইতে সেই কন্যাটী বা কৈলাসচন্দ্র দত্ত আর দেশে প্রত্যাগমন করে নাই। কিন্তু লোকপরম্পরায় শুনিতে পাওয়া যায় যে, অনেক দিবস হইল, কৈলাসচন্দ্র দত্ত মরিয়া গিয়াছে, ও সেই স্ত্রীলোকটী কলিকাতার কোন স্থানে বেশ্যাবৃত্তি করিতেছে। চৌকিদারের নিকট হইতে এই সংবাদ অবগত হইয়া বুঝিতে পারিলাম, যে বিষয় অবলম্বন করিয়া আমি তথায় আগমন করিয়াছি, তাহাতে কৃতকার্য্য হইবার পন্থা প্রাপ্ত হইতে পারা যাইবে সন্দেহ নাই। মনে মনে এইরূপ ভাবিয়া আমি সেই চৌকিদারকে জিজ্ঞাসা করিলাম, ঐ স্ত্রীলোকটীর পিতা বিমলাচরণ দত্ত, এখন কোথায়?

 চৌকিদার। তিনি বৃদ্ধ হইয়াছেন, কোন স্থানে গমনাগমন করেন না, বাড়ীতেই থাকেন। গতকল্য আমি তাঁহাকে তাঁহার বাড়ীতেই দেখিয়াছি।