পাতা:মতিয়া বিবি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
দারোগার দপ্তর, ১৩৩ সংখ্যা।

নিকট হইতে আমরা কোন কথা বাহির করিতে সমর্থ হইলাম না, আমাদিগের চেষ্টা যত্ন, কৌশল, প্রভৃতি সমস্তই ব্যর্থ হইয়া গেল, তখন অনন্যোপায় হইয়া আমরা পরিশেষে ঐ অপরাধের নিমিত্ত উহাদিগকে বিচারকের নিকট প্রেরণ করিলাম। কিন্তু বলা বাহুল্য, উহাদিগের উপর পূর্ব্বকথিত যে সকল প্রমাণ আদালতে প্রমাণিত হইল, তাহাতে কোন বিচারকই উহাদিগের সকলকে কোনরূপেই দণ্ড প্রদান করিতে পারেন না। তাহার উপর শবছেদকরী ডাক্তারের সাক্ষ্য। মৃতদেহ যেরূপ পচিয়া গিয়াছে, তাহাতে তিনি মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করিতে সমর্থ হন না। তিনি উহার প্লীহা, যকৃৎ, হৃৎপিণ্ড প্রভৃতির কিয়দংশ কাটিয়া রাসায়নিক পরীক্ষার নিমিত্ত প্রেরণ করেন। রাসায়নিক পরীক্ষক পরীক্ষা করিয়া যে রিপোর্ট প্রদান করেন, তাহাতে জানিতে পারা যায়, বিষপানই উহার মৃত্যুর কারণ। ইহাতে অসামীগণের যে বিশেষ সুবিধাজনক বিষয়, তাহার আর কিছু মাত্র সন্দেহ নাই। কারণ, আমরা প্রমাণ ও যুক্তির দ্বারা স্থির করিয়াছিলাম যে, উহারা তারামণিকে হত্যা করিয়া তাহার মৃতদেহ লোহার সিন্দুকে বন্ধ করিয়া দিয়া, তাহার যথা-সর্ব্বস্ব চুরি করিয়া লইয়া গিয়াছিল, কিন্তু রাসায়নিক পরীক্ষকের পরীক্ষা-ফল পাইয়া সেই হত্যার যুক্তি অন্যরূপ ধারণ করিল। তখন মনে মনে ভাবিতে লাগিলাম, বিষ-প্রয়োগে তারামণিকে হত্যা করিল কিরূপে? যাঁহার নিকট প্রথমে এই মোকর্দ্দমার বিচার হয়, তিনি মহম্মদ হানিফ ও মহম্মদ কাছেমকে অব্যাহতি দিয়া কেবল মহম্মদ মসলিমকে বিচারার্থ উচ্চ আদালতে প্রেরণ করেন।