পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১০৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চতুর্দ্দশ পরিচ্ছেদ
৯৫

শান্ত হইয়া বিনোদিনী কহিল, “মা, এখন তোমার জ্ঞান হইয়াছে, ফিরিঙ্গীরা এ সংবাদ পাইলে এখনই তোমাকে ধরিয়া লইয়া যাইবে। তোমাকে এখন পলাইতে হইবে।” তাহার পরে ময়ূখের দিকে ফিরিয়া কহিল, “বাবা, তুমি যখন ললিতার জন্য এত করিয়াছ, তখন আর একটু উপকার কর, তুমি ইহাকে লইয়া ভীমেশ্বরে ফিরিয়া যাও।” ময়ূখ ঈষৎ হাসিয়া কহিলেন, “আমি উঠিতে পারিলেই লইয়া যাইব।” তাহা শুনিয়া ললিতা বলিয়া উঠিল, “মাসিমা, ভীমেশ্বরে কোথায় যাইব? পিতা কি আমাকে গৃহে স্থান দিতে ভরসা করিবেন?” বলিতে বলিতে ললিতার আকর্ণবিশ্রান্ত নীলেন্দীবরতুল্য নয়নযুগল জলে ভরিয়া আসিল। ময়ূখ কহিলেন, “ললিতা, গোস্বামী ঠাকুর তোমাকে গৃহে লইতে সম্মত হইলেও গ্রামের লোকে দিবে কি না সন্দেহ। হরিনাথ গঙ্গোপাধ্যায় আছে, মাধব গঙ্গোপাধ্যায় আছে, কালিদাস চট্টোপাধ্যায় আছে, তাহারা নিশ্চিন্ত থাকিবে না।” বিনোদিনী দীর্ঘ নিশ্বাস ত্যাগ করিয়া কহিল, “তাহাও ত বটে, তবে কি উপায় হইবে? বাবা, তুমি যখন ললিতাকে উদ্ধার করিতে আসিয়াছিলে তখন মনে কি স্থির করিয়াছিলে?” “মা, এ সকল কথা একবারও মনে হয় নাই।”

 বিনোদিনী মাথায় হাত দিয়া ভাবিতে বসিল; ক্ষণকাল পরে কহিল, “ললিতা যখন আমার আশ্রয়ে আসিয়া পড়িয়াছে তখন আমি তাহাকে ফেলিয়া দিতে পারিব না। এখানে