পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১০৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ
১০১

যুবক সেই দিকে চাহিল, মুহূর্ত্তের জন্য রমণীদ্বয়ের মুখমণ্ডল তাহার নয়নগোচর হইল। তাতারী নিমক্‌হারাম্‌ নহে, সে তৎক্ষণাৎ যবনিকা টানিয়া দিল, যুবকের মনে হইল যে দ্বিতীয়ার মুখ তাহার নিকট অপরিচিত নহে। গবাক্ষের যবনিকা সরিল না। ক্ষণকাল পরে দরিয়াই ফটক হইতে একজন খোজা ও একটি পরিচারিকার সহিত এক প্রৌঢ়া বাহির হইয়া আসিল। তাহাকে নৌকায় তুলিয়া লইয়া যুবক মাঝিদিগকে নৌকা ছাড়িয়া দিতে বলিল। আগ্রার কিল্লা দূরে সরিয়া গেলে, প্রৌঢ়া অবগুণ্ঠন মোচন করিয়া কহিল, “বাবা, আজি সংবাদ শুভ; বাদশাহ বেগমকে রাজি করিয়া আসিয়াছি, তুমি কল্য নবাব আসফ্‌ খাঁর সহিত সাক্ষাৎ করিও, তিনি তোমাকে দেওয়ান-ই-খাসে লইয়া যাইবেন।”

 যুবক প্রফুল্লবদনে কহিল, “মা, এতদিনে বোধ হয় ভগবান্‌ মুখ তুলিয়া চাহিলেন।”

 “আর এতদিনে বোধ হয় ললিতার দুঃখ ঘুচিল।”

 “আসদ্‌খাঁর কোন সংবাদ পাইলে?”

 “না, তবে শুনিলাম যে ফিদাই খাঁ নিকট হইতে খাজনা লইয়া দেওয়ান হরেকৃষ্ণ রায় আগ্রায় আসিতেছেন।”

 “আসদ্‌ খাঁ না আসিলে বাদশাহের দরবারে সুবিধা হইবে না।”

 “দেখ বাবা, এইবার তুমি ললিতাকে বিবাহ কর।”

 “বাঙ্গালী পুরোহিত পাইব কোথায়?”