“অদ্য খোদা ফিরিঙ্গি হার্ম্মাদের বিনাশের উপায় জুটাইয়া দিয়াছেন, নূতন ফিরিঙ্গি দিয়া পুরাতন ফিরিঙ্গি বিনাশ করিব।”
ময়ূখ বিম্মিত হইয়া আসদ্ খাঁর মুখের দিকে চাহিলেন। সহসা নাকারাখানায় নাকারা বাজিয়া উঠিল, আসদ্ খাঁ ফিরিয়া দাঁড়াইলেন। ময়ূখ দেখিলেন যে, দেওয়ান-ই-খাসের পশ্চাতে একটি সুবর্ণনির্ম্মিত কবাট খুলিয়া গিয়াছে, বাদশাহ্ ক্ষুদ্র হস্তিদন্তনির্ম্মিত তঞ্জামে আরোহণ করিয়া প্রবেশ করিতেছেন। সমবেত সভাসদ্গণ তিন বার ভূমি স্পর্শ করিয়া অভিবাদন করিল, তাহা দেখিয়া ময়ূখও তদ্রূপ করিলেন। বাদশাহ্ উপবেশন করিলে উজীর আসফ্ খাঁ, বখ্শী নূরউল্লা খাঁ, আসদ্ খাঁ, শাহ্নওয়াজ খাঁ, প্রভৃতি সভাসদ্গণ সিংহাসন বেষ্টন করিয়া দাঁড়াইলেন। আসফ্ খাঁ সর্ব্ব প্রথমে ময়ূখকে বাদশাহের সম্মুখে উপস্থিত করিলেন। বাদশাহ শাহ্জহান প্রসন্নবদনে কহিলেন, “বাঙ্গালী বাহাদুর, তোমার কথা বিস্মৃত হই নাই, কিন্তু তোমার অগ্রে ফিরিঙ্গি।” আসফ্ খাঁ ষিবণ্ণ বদনে কহিলেন, “জনাব, এই যুবা আগ্রা সহরে তিন বৎসর বেকার বসিয়া আছে, ইহার পিতা জিন্নৎমকানী বাদশাহ্ জহাঙ্গীরের জমানায় সরকারের বহুৎ খিদ্মৎ করিয়াছে—”
“সাহেব, অদ্যই ইহার ব্যবস্থা করিব। ফিরিঙ্গি দূত কোথায়?”
“উপস্থিত আছে।”