পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ময়ূখ

পৌঁছিল। দুই তিন খান বৃহৎ মহাজনী নৌক পালভরে ধীরে ধীরে উজান চলিতেছিল, কোশাখানি তাহাদের সম্মুখে আসিয়া দাঁড়াইল। দুইতিন বার বন্দুকের শব্দ হইল, সঙ্গে সঙ্গে একখানি নৌকা ডুবিয়া গেল। সেই সময়ে ভুবন বলিয়া উঠিল, “মহারাজ, ঠিক বলিয়াছিলাম, ফিরিঙ্গি হার্ম্মাদের কোশা, তিন খান নৌকাই মরিবে।”

 ক্রমাগত বন্দুকের শব্দ হইতে লাগিল; দেখিতে দেখিতে তিনখানি নৌকাই ডুবিয়া গেল। সহসা নক্ষত্রবেগে কোশা তীরের দিকে ছুটিয়া আসিল, এবং দেখিতে দেখিতে পূর্ব্ববর্ণিত জীর্ণ ঘাটে লাগিল। ঘাট হইতে বামা-কণ্ঠ-নিঃসৃত আর্ত্তনাদ শ্রুত হইল; তাহা শুনিয়া যুবক কহিলেন, “ভুবন, নৌকা ছাড়িয়া দাও।”

 “হুজুর, বলেন কি? আমরা এই দুইজন লোক, হার্ম্মাদের নৌকায় পঞ্চাশ জন বন্দুকধারী আছে, জানিয়া শুনিয়া মরিতে যাইব?” “নৌকা খুলিয়া দাও, না দিলে আমি তীরে নামিয়া যাইব।” “একই কথা, তবে একটা কথা রাখুন, নৌকা এই বাঁশঝাড়ের মধ্যে ঢুকাইয়া দিই, তাহা হইলে সহজে দেখিতে পাইবে না। আসুন, দুইজনে তীর ছাড়িতে আরম্ভ করি।”

 ক্ষুদ্র নৌকা অনায়াসে বেণুকুঞ্জে প্রবেশ করিল; যুবক দেখিলেন, ঘাটের উপরে একজন ফিরিঙ্গি একটি রমণীকে নৌকায় উঠাইবার চেষ্টা করিতেছে, রমণী ঘাটের সোপানগুলি