পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৪৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৩৬
ময়ূখ

 “এত অধিক রাত্রি অবধি বাদশাহত দরবারে থাকেন না। আমি দেখিয়া আসি।”

 তর্করত্ন বিনোদিনীর গৃহ হইতে বাহির হইয়া আগ্রা দুর্গের দিল্লী ফটক পর্য্যন্ত আসিলেন। ময়ূখকে না দেখিতে পাইয় তিনি দিল্লীর ফটক হইতে অমর সিংহ ফটকের সম্মুখ পর্য্যন্ত গেলেন। তখন আগ্রা দুর্গের চতুর্দ্দিক্‌ জনশূন্য; মনসবদারগণের শিবিরে শিবিরে এক একজন প্রহরী ব্যতীত সকলেই সুষুপ্তিমগ্ন, অমরসিংহ ফটক জনশূন্য। তর্করত্ন বিফলমনোরথ হইয়া গৃহে ফিরিলেন। বিনোদিনী ও ললিতা তাঁহার প্রতীক্ষায় বসিয়াছিলেন। তাঁহাকে একাকী ফিরিতে দেখিয়া ললিতার নয়ন দিয়া অশ্রুধারা প্রবাহিত হইল। তর্করত্ন বিনোদিনীকে কহিলেন, “মা, তুমি ব্যস্ত হইও না, আমি এখনই নবাব য়ামিনউদ্দৌলার নিকট যাইতেছি, এখনই সংবাদ লইয়া আসিতেছি। কোতয়াল এখনই খুঁজিয়া বাহির করিবে।”

 বিনোদিনী চক্ষু মুছিতে মুছিতে কহিল, “বাবা, আপনি যাহা ভাল বিবেচনা করেন করুন, রাত্রি অধিক না হইলে আমি বাদশাহ্‌ বেগমের নিকটে গিয়া কাঁদিয়া পড়িতাম।”

 তর্করত্ন তাহাকে আশ্বাস দিয়া য়ামিনউদ্দৌলা আসফ্‌ খাঁর গৃহে চলিলেন। তিনি যখন সপ্তগ্রাম হইতে শাহনওয়াজখাঁর সহিত আগ্রায় আসিয়াছিলেন, তখন তাঁহার সহিত আসফখাঁর পরিচয় হইয়াছিল। বুদ্ধিজীবী আসফ্‌খাঁ বঙ্গবাসী ব্রাহ্মণের তীক্ষ্ণ বুদ্ধির পরিচয় পাইয়া তাঁহাকে রাজ-