পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৫৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
একবিংশ পরিচ্ছেদ
১৪৫

বেষ্টন করিয়া দাঁড়াইল। সেই মসীপিণ্ড ময়ূখকে কহিল, “মহারাজ, দুই খানা তলোয়ার পড়িয়া আছে, দুয়ার হাব্‌সীদের পিছনে।”

 ময়ূখ চিত্রার্পিতের ন্যায় দাঁড়াইয়াছিলেন, মসীপিণ্ডের কথা শুনিয়া তাঁহার চমক ভাঙ্গিল। তিনি তরবারি গ্রহণ করিলেন। আগন্তুকের কথা শুনিয়া খোজাদিগের ভয় ভাঙ্গিল, একজন কহিল, “ওরে জীন নহে, মানুষ।” দ্বিতীয় ব্যক্তি কহিল, “পাগল আর কি? মানুষ হইলে কখন আসমানে উঠিয়া যাইতে পারে?” তখন সেই মসীপিণ্ড পুনরায় কহিল, “হাঁ, আমি মানুষ।” ময়ূখ এতক্ষণে তাহাকে চিনিলেন এবং জিজ্ঞাসা করিলেন, “ভুবন?”

 ভুবন কহিল, “হুজুর, বিলম্ব করিয়া কাজ নাই।”

 সেই মুহূর্ত্তে খোজা ও তাতারীগণ তাহাদিগকে আক্রমণ করিল, অনেকগুলি উল্কা নিবিয়া গেল, বধমঞ্চ পুনরায় অন্ধকারপ্রায় হইল, এই সময়ে গুলরুখের চেতনা ফিরিল। সহসা গুলরুখ্‌ শাহ্‌জাদীর পদতলে পতিত হইয়া কহিলেন, “শাহ্‌জাদী মারিও না, আমি আর একবার বুঝাইয়া দেখি।” জহানারা বেগমের মন ভিজিল, তিনি ইঙ্গিত করিলেন, খোজাগণ নিরস্ত হইল। তাহা দেখিয়া ভুবন এক লম্ফে ফাঁসী কাষ্ঠে উঠিয়া অন্ধকারে মিশিয়া গেল।

 পুনরার মশাল জ্বলিল। খোজা ও তাতারীগণ সেই ভূগর্ভস্থিত পুরী তন্ন তন্ন করিয়া অনুসন্ধান করিল; কিন্তু ভুবনকে