পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৫৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৪৬
ময়ূখ

দেখিতে পাওয়া গেল না। তখন গুলরুখের অনুরোধে খোজা ও তাতারীগণ কক্ষ পরিত্যাগ করিল। শাহ্‌জাদীও কক্ষের বাহিরে আসিলেন। গুলরুখ্‌ ধীরে ধীরে ময়ূখের দিকে অগ্রসর হইলেন। ময়ূখ তাঁহাকে দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “বিবি, তুমি কে? তুমি কেন আমায় বৃথা কষ্ট দিতেছ?” গুলরুখ স্থির হইয়া দাঁড়াইলেন, তখন তাঁহার হৃদয় দ্রুতবেগে স্পন্দিত হইতেছিল, জিহ্বা শুষ্ক হইয়া আসিয়াছিল, গুলরুখের মুখে কথা ফুটিল না। তাহা দেখিয়া ময়ূখ মনে করিলেন যে রমণী অস্ত্র দেখিয়া ভয় পাইয়াছে। তিনি তরবারি দূরে নিক্ষেপ করিয়া কহিলেন, “আমি ত আপনাকে চিনি না?”

 সহসা গুলরুখের জিহ্বার জড়তা দূর হইল, সে আবেগরুদ্ধ কণ্ঠে বলিয়া উঠিল, “তুমি-আপনি—আমাকে চিনিতে পারিলে না?” ময়ূখ কহিলেন, “না।”

 “সপ্তগ্রামের যুদ্ধে আহত হইয়াছিলে স্মরণ আছে?” “আছে” “বজরায় আমি তোমাকে শুশ্রূষা করিয়াছিলাম— স্মরণ আছে?”

 “সে কি তুমি?”

 “হাঁ।”

 “রোগশয্যায় স্বপ্ন দেখিতাম আমার শিয়রে বসিয়া ললিতা সেতার বাজাইতেছে, কিন্তু ললিতা ত সেতার বাজাইতে জানে না?” “সে ললিতা নহে, সে আমি।” “তোমাকে ত আমি পূর্ব্বে দেখি নাই?”