চৈতন্যদাস দাঁড়াইতে না পারিয়া বসিয়া পড়িল। বাদশাহ্ বিস্মিত হইয়া তাহার দিকে চাহিলেন, তাহা দেখিয়া শাহ্নওয়াজ খাঁ কহিলেন,“জনাব্ আলি, পর্ত্তুগীজ পাদ্রী ইহার দেহের সমস্ত অস্থি চূর্ণ করিয়া দিয়াছে, ইহার দাঁড়াইবার শক্তি নাই।” বাদশাহ্ জিজ্ঞাসা করিলেন, “নবাব সাহেব, পর্তুগীজ পাদ্রী ইহার অস্থি চূর্ণ করিল কেন?”
“শাহনশাহ্, তাহা ঐ হিন্দু ফকীরের মুখ হইতেই শুনিবেন।”
আসফ্ খাঁর আদেশে দেওয়ান হরেকৃষ্ণ রায় বাদশাহের প্রশ্ন ও চৈতন্যদাসের উত্তর তর্জ্জমা করিতে লাগিলেন। বাদশাহ্ জিজ্ঞাসা করিলেন, “ফকীর, পর্ত্তুগীজ পাদ্রী তোমার উপর অত্যাচার করিয়াছিল কেন?”
“সে আমার বন্ধু সেই জন্য।”
“সে তোমার বন্ধু?” “মহারাজ, যে পথভ্রান্তকে পথ নির্দ্দেশ করে সেই বন্ধু।”
“তুমি কি পথ ভুলিয়া হুগলী গিয়াছিলে?”
“না, ইচ্ছা করিয়াই গিয়াছিলাম।”
“তবে পথ ভুলিয়াছিলে কোথায়?”
“বৈরাগী হইয়া যখন অর্থের লোভ হইয়াছিল তখনই পথ ভুলিয়াছিলাম।”
“পর্ত্তুগীজ পাদ্রী তোমার উপরে অত্যাচার করিল কেন?” “গোবিন্দের আদেশে।”