পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ
১১

জামাতাকে ঘরে আনিয়া সমাজ নিমন্ত্রণ করিবে।” “হরি, রাধামোহন কি ফিরিঙ্গীকে নিমন্ত্রণ করিয়া আনিয়া কন্যা সম্প্রদান করিয়াছে?” “না।” “তবে কি হইয়াছে?” “গোস্বামীর কন্যা গঙ্গাস্নানে গিয়াছিল, ফিরিঙ্গীরা তাহাকে ঘাট হইতে ধরিয়া লইয়া গিয়াছে।” “তাহাতে রাধামোহনের অপরাধ কি?” “অবিবাহিতা কন্যাকে স্লেচ্ছ ফিরিঙ্গী ধরিয়া লইয়া গিয়াছে, তাহাতে পিতৃকুলের দোষ হইবে না?” “পিতৃকুলের অপরাধ? এই মাত্র বলিতে পার যে কন্যা গঙ্গাস্নানে যায় কেন? এই সমাজে কাহার মাতা, কাহার বনিতা, কাহার ভগিনী গঙ্গাস্নানে না গিয়া থাকে?” রাঢ়ীয় কুলীন সমাজ নিরুত্তর। কিয়ৎক্ষণ পরে হরিনাথ সাহসে ভর করিয়া কহিল, “কিন্তু সমাজ রক্ষার উপায় কি হইবে?”

 “সমাজের ত কোন হানি হয় নাই। তোমার ভাগিনী যখন মুসলমানের সহিত কুলত্যাগ করিয়াছিল, তখন তুমি তাহাকে গৃহে ফিরাইয়া আনিবার চেষ্টা করিয়াছিলে, সেইজন্য তোমার প্রতি দণ্ডবিধান করিয়া সমাজ রক্ষার ব্যবস্থা করিয়াছিলাম। রাধামোহনের কন্যা কি ফিরিঙ্গীর ঔরসজাত পুত্র প্রসব করিয়াছে?”

 হরিনাথ অগত্যা নীরব হইল। তর্করত্ন পুনরায় জিজ্ঞাসা করিলেন, “সমাজের কোন হানি হয় নাই, তথাপি সমাজ রক্ষার ব্যবস্থা করিয়াছ; কিন্তু বৃদ্ধ অপুত্রক রাধামোহনের