পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/২০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১২
ময়ূখ

একমাত্র কন্যা দস্যুকর্ত্তৃক অপহৃত হইয়াছে, তাহার উদ্ধারের কি ব্যবস্থা করিয়াছ?”

 “কি করব? ফিরিঙ্গী হার্ম্মাদ গোলা গুলি লইয়া লড়াই করে, একি যে সে দস্যু যে লাঠিয়াল পাঠাইয়া লড়াই করিব? ফৌজদার সুবাদার অবধি ফিরিঙ্গীর ভয়ে শঙ্কিত; সেখানে আমরা কি করিব?”

 হরি। কিন্তু গোস্বামীকে জাতিচ্যুত করা উচিত।

 তর্করত্ন। তোমরা মানুষ না পাষাণ? উপকার করিতে পার না, কিন্তু অপকার করিতে জান। অভাগিনীকে উদ্ধার না করিয়া তাহার পিতাকে জাতিচ্যুত করিতে বসিয়াছ? নারায়ণ! এই ব্রাহ্মণসমাজ রসাতলে যায়না কেন?

 পশ্চাৎ হইতে গম্ভীরস্বরে উচ্চারিত হইল, “অনেক দিন গিয়াছে। তর্করত্ন, ইহা সমাজের কবন্ধ।” সকলে বিস্মিত হইয়া চাহিয়া দেখিলেন, বৃদ্ধ রাধামোহন গোস্বামী অর্দ্ধনগ্ন অবস্থায় দাঁডাইয়া আছেন। মুহূর্ত্তমধ্যে তর্করত্ন তাঁহাকে বাহুপাশে আবদ্ধ করিলেন, সহানুভূতি পাইয়া বৃদ্ধ ফুকারিয়া কাঁদিয়া উঠিল। সেই অবসরে কুলীনকূলচূড়ামণি হরিনাথ মুখোপাধ্যায় পলায়ন করিল।

 তর্করত্নের স্কন্ধে মস্তক রাখিয়া উচ্চৈঃস্বরে রোদন করিতে করিতে বৃদ্ধ গোস্বামী কছিলেন, “ভাই, ললিতা আমার দুইদিন উপবাসী ছিল, ব্রত সাঙ্গ করিয়া গঙ্গাস্নান করিতে গিয়াছিল, সেই অবস্থায় দুর্ব্বৃত্ত ফিরিঙ্গী তাহাকে