পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৪০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩২
ময়ূখ

স্তব্ধ হইয়া সেতারের আলাপ শুনিতেছিল; সেতার থামিলে সকলে একসঙ্গে কথা কহিতে আরম্ভ করিল। কেহ বলিল, এ বাদশাহের বেটী, ফিরিঙ্গীরা ধরিয়া আনিয়াছিল, এখন প্রাণের দায়ে ছাড়িয়া দিয়াছে। আর একজন বলিল যে, এ ইরাণের তওয়াইফ, সুবাদারের মজলিসে মজুরা করিতে যাইতেছে। এক বৃদ্ধ ফকির শ্মশ্রুতে অঙ্গুলী চালনা করিতে করিতে কহিল যে, রমণী নিশ্চয়ই পরীজাদী, আশমান ছাড়িয়া শীকারের চেষ্টায় দুনিয়ায় আসিয়াছে। এই অবসরে যুবার পার্শ্বে দাঁড়াইয়া হবিব কহিল,“বাবু সাহেব বোধ হয় সহরে নূতন আসিয়াছেন?” যুবা মুখ ফিরাইয়া দেখিল যে এক বৃদ্ধ মুসলমান তাঁহার পলাণ্ডুগন্ধযুক্ত মুখ ও মেহেদীসংযুক্ত শ্মশ্রু তাহার মুখের নিকটে লইয়া আসিয়া প্রচুর পরিমাণে নিষ্ঠীবন বর্ষণ করিতেছে। যুবা বিরক্ত হইল; কিন্তু বুড়া এমনই মোলায়েম কায়দার সহিত কথা কয়টি বলিয়াছিল যে, বিরক্তি প্রকাশ করিতে যুবক লজ্জা বোধ করিল। সে কহিল, “হাঁ।” তখন বৃদ্ধ এক দীর্ঘ সেলাম করিয়া কহিল, “বাবু সাহেব সম্ভ্রান্তবংশজাত, মুখ দেখিলেই তাহা বুঝিতে পারা যায়। বাবু সাহেব বোধ হয় ভ্রমণ করিতে আসিয়াছেন? সপ্তগ্রাম বড় আজব সহর, এমন সহর গৌড় ছাড়া সুবাবাঙ্গালায় আর নাই।” যুবা কি বলিবে তাহা ভাবিয়া পাইল না। এই বৃদ্ধ কে? সে সহসা দয়াপরবশ হইয়া তাহার সহিত আলাপ করিতে আসিল কেন? যুবা যখন এই চিন্তা করিতেছিল, তখন বুড়া পুনরায় জিজ্ঞাসা করিল, “বাবু