পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৪২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩৪
ময়ূখ

খোস্‌, বিবির প্রাণে এখন আশিক্‌ জাগিয়াছে। তুমি শীঘ্র আইস।” খাঁ সাহেব দাড়ী গোঁফ্‌ চোমরাইয়া লইয়া বজরায় উঠিয়া কছিল, “ফতেমা বিবি, তুমি তবে এত্তালা দিয়া আইস।” প্রৌঢ়া কহিল,—“এত্তালা দিতে হইবে না, তুমি যাও।” বজরার প্রথম কক্ষের দ্বারে কিংখাবের পর্দ্দা উঠাইয়া খাঁ সাহেব কামরায় প্রবেশ করিল। যুবতী তখন বজরার বাতায়নের পার্শ্বে বসিয়া একখানি পত্র লিখিতেছিল; তাহা দেখিয়া খাঁ সাহেব সেলাম করিয়া দু’য়ারে দাঁড়াইয়া রহিল। পত্র লেখা শেষ হইল, যুবতী তাহা কুন্দদন্তে টিপিয়া ধরিয়া লেফাফায় বন্ধ করিল এবং দ্বিরদরদখচিত অপূর্ব্ব কৌটা হইতে গালা ও মোহর বাহির করিল; তাহা দেখিয়া খাঁ সাহেব কক্ষান্তর হইতে প্রজ্বলিত বর্ত্তিকা লইয়া আসিল। পত্র মোহর করিয়া যুবতী তাহা খাঁ সাহেবের হস্তে দিল এবং কহিল, “গোকুলবিহারীর কুঠী হইতে এক হাজার আসর্‌ফী লইয়া আইস। আর দেখ অদ্যই একটা বাটি ভাড়া করিয়া আইস, আমি আকবরনগর যাইব না, সপ্তগ্রামেই থাকিব।” খাঁ সাহেব সেলাম করিয়া দ্রুতপদে পলায়ন করিল।

 হবিব যুবককে সঙ্গে লইয়া জাফরখাঁর কবর, মসজিদ্‌, মদরসা প্রভৃতি দেখাইয়া তিন্তিড়ি বৃক্ষতলে ফিরাইয়া আনিল। যুবক তাহাকে কিছু অর্থ দিতে চাহিল; কিন্তু বৃদ্ধ তাহা কোন মতেই গ্রহণ করিল না। সে কহিল, “হুজুর ঠিকানা দিয়া যাউন, আমি কল্য প্রাতে দুয়ারে হাজির থাকিব এবং ফরমায়েস