পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৫০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৪২
ময়ূখ

আমাকে সংবাদ দাও নাই কেন? অনুপনারায়ণ খানাজাদ্‌ খাঁর আমলে বারবক সিংহ বন্দোবস্ত করিয়া লইয়াছে, তখন যদি তোমার তরফের কোন উকিল জহাঙ্গীর নগরে উপস্থিত থাকিত, তাহা হইলে তুমি তোমার পিতার জমীদারী পাইতে। তুমি এখন কি করিতেছ?” “সাহেব, শৈশবে মাতৃহারা হইয়াছি, আমার ভ্রাতা ভগিনী কেহই নাই। পিতার মৃত্যুর সময়ে আমার বয়স মাত্র চতুর্দ্দশ বৎসর ছিল, তখন খুড়া মহাশয় গোপনে বাদশাহের সনন্দ আনাইয়া সম্পত্তি দখল করিয়াছেন। পিতার মৃত্যুর পরে চারি বৎসর শাস্ত্র ও শস্ত্র শিক্ষা করিয়াছি, ভাবিতেছিলাম জীবিকা অর্জ্জন চেষ্টায় বাহির হইব, এমন সময়ে ফিরিঙ্গির সহিত বিবাদ বাধিল।”

 ময়ূখ ললিতার হরণবৃত্তান্ত আমূল আসদ্‌ খাঁকে শুনাইলেন। ময়ূখ গোকুলবিহারীর আশ্রয় পাইয়াছেন শুনিয়া আসদ্‌ খাঁ সন্তুষ্ট হইয়া কহিলেন, “উত্তম করিয়াছ, গোকুলের ন্যায় পরাক্রান্ত হিন্দু সপ্তগ্রামে কেহ নাই। কিন্তু তুমি এখন একাকী মীনাবাজারে ফিরিতে পাইবে না। আমার সহিত কিল্লায় চল, সেখান হইতে সঙ্গে পাহারা দিয়া পাঠাইয়া দিব।”

 ময়ূখ ও আসদ্‌ খাঁ কিল্লায় ফিরিলেন। ফৌজদার কলিমুল্লা খাঁ আহারান্তে অহিফেণ সেবন করিয়া ঝিমাইতেছিলেন; ময়ূখকে আসদ খাঁ লইয়া ফৌজদারের বারদুয়ারীতে প্রবেশ করিলেন। ভয় পাইয়া বুড়া ফৌজদার চৌকি হইতে পড়িতে পড়িতে বাঁচিয়া গেল। আসদ্‌ খাঁ প্রবেশ করিয়াই কহিলেন, “খাঁ সাহেব,