পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৫৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সপ্তম পরিচ্ছেদ
৪৭

তৃতীয় ফিরিঙ্গি হবিবের হতচেতন দেহ পদাঘাতে দূরে নিক্ষেপ করিল।

 তখন ফিরিঙ্গিগণ যুবতী ও ফতেমাকে বন্ধন করিয়া লুণ্ঠনে মনঃসংযোগ করিল এবং কিয়ৎক্ষণ পরে তাহাদিগকে লইয়া অট্টালিকা পরিত্যাগ করিল। পথে সহস্র পুরুষ ও স্ত্রী বালক ও বালিকা ফিরিঙ্গিদিগের হস্তে বন্দী হইয়া দাঁড়াইয়াছিল; তাহাদিগের দুই দিকে বন্দুক হাতে শ্রেণীবদ্ধ ফিরিঙ্গি সেনা পাহারা দিতেছিল। ফতেমা ও যুবতী বন্দীদিগের নিকটে গিয়া দাঁড়াইল। তখনও দূরে যুদ্ধ চলিতেছিল, মুহুর্মুহু বন্দুক ও কামানের আওয়াজ আসিতেছিল। একজন বৃদ্ধ সম্ভ্রান্ত মুসলমান যুবতীর পার্শ্বে দাঁড়াইয়াছিলেন, তিনি যুবতীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “বাছা, তোমাকে রক্ষা করিবার কি কেহ ছিল না? এখন কথা কহিতে লজ্জা করিও না, আমি তোমার পিতার বয়সী, বিপদের সময় লজ্জা করিতে নাই।” যুবতী মুখ তুলিয়া কহিল, “পিতা, সংসারে আমার কোন অভিভাবক নাই, এক বৃদ্ধ পরিচারক ছিল, ফিরিঙ্গিরা তাহাকে মারিয়া আমাদিগকে ধরিয়া আনিয়াছে।” বৃদ্ধ যুবতীর অসামান্য রূপলাবণ্য দেখিয়া কহিল, “মা, তোমার বয়স অল্প, তোমার দুর্ভাগ্যবশতঃ তোমার ন্যায় রূপ হিন্দুস্থানে বিরল, ফিরিঙ্গির হাতে তোমার অশেষ দুর্দ্দশা হইবে। তুমি মুসলমানের কন্যা, মরিতে শিখিয়াছ কি?” যুবতী কহিল, “শিখিয়াছি, আমার পোষাকের মধ্যে জহর আছে, অবসর