পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৬৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৬০
ময়ূখ

 বৈরাগী বড় নির্ল্লজ্জ; ব্রাহ্মণ কোথায় যাইবে তাহা জানিবার ইচ্ছা সে কোন মতেই দমন করিতে পারিতেছিল না। বৈরাগী পুনরায় জিজ্ঞাসা করিল, “বলি ঠাকুর মহাশয় কি সাতগাঁয়ে যাইবেন?”

 সেই সময়ে পথ দিয়া একজন মাতাল টলিতে টলিতে যাইতেছিল, সে বৈরাগীর কথা শুনিয়া বলিয়া উঠিল, “বাবাজী, এমন কাজ করিও না, তোমার মত নধর পাঁঠা পাইলে ফিরিঙ্গিরা লোভ সম্বরণ করিতে পারিবে না, গির্জ্জায় লইয়া গিয়া বলি দিবে।” বৈরাগী বলির কথা শুনিয়া নিষ্ঠীবন ত্যাগ করিয়া কহিল, “রাধে গোবিন্দ, রাধে গোবিন্দ। ঠাকুর মহাশয়, বেটা বড়ই বেল্লিক।” মাতাল সেইখানে দাঁড়াইয়া দাঁড়াইয়া টলিতে লাগিল এবং কহিল, “মিথ্যা নহে বাবাজী, তোমার ভুঁড়ীটিতে অনেক মাংস আছে, সুন্দর শিখ কাবাব্‌ বনিবে।” বৈরাগী আবার নিষ্ঠীবন ত্যাগ করিল, ব্রাহ্মণ ক্রুদ্ধ হইয়া রোধকষায়িত নেত্রে মদ্যপের দিকে চাহিল। সে লজ্জিত না হইয়া কহিল, “ঠাকুর চটেন কেন? কাবাব্‌ অতি সুন্দর দ্রব্য।” ব্রাহ্মণ কহিলেন, “সুন্দর দ্রব্য হয় তুমি গিয়া খাও।” “ঠাকুর, এমন পাঁঠাটি ছাড়িয়া যাইব?” “তুমি বড় জ্বালাতন আরম্ভ করিলে, শীঘ্র এ স্থান পরিত্যাগ কর।” বৈরাগী বলিল, “ঠাকুর, চলুন সরিয়া যাই, সাত গাঁ অতি কুস্থান, বেটা হয় ত এখনই বমন করিয়া দিবে।”

 বৈরাগীর কথা শুনিয়া মদ্যপ ক্রোধে অধীর হইয়া বৈরাগীর