পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৭১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
নবম পরিচ্ছেদ

ভারিয়াছিলাম এইবার সন্ধান পাইব। নৌকা কোথায় আছে?” “নিকটেই বাদশাহী পুলের নীচে।” “তোমাদের আহার হইয়াছে?”

 তখন দিবা দ্বিতীয় প্রহর অতীত হইয়াছে, ব্রাহ্মণের তখনও স্নানাহার হয় নাই। ভুবন তাঁহার মুখ দেখিয়া তাহা বুঝিতে পারিল এবং কহিল, “খাইব কি ঠাকুর মহাশয়? সকাল হইতে ত ঘুরিয়াই বেড়াইতেছি। চলুন নৌকায় ফিরিয়া যাই।”

 বৈরাগী নৌকার কথা শুনিয়া সাগ্রহে জিজ্ঞাসা করিল, “ঠাকুর মহাশয়ের কি নৌকা আছে? তাহা হইলে ত হুগলীতে যাইতে পারা যায়?” ব্রাহ্মণ হাসিয়া কহিলেন, “যায় বই কি, বাবাজী, তুমি আমাদিগের সহিত আইস, আমরা অপরাহ্নে হুগলী যাইব।” বাবাজী সানন্দে কহিল, “গৌরহরি, গৌরহরি; ঠাকুর মহাশয়, হুগলীতে আমার শিষ্যবাড়ী পায়ের ধূলা দিতে হইবে।” ব্রাহ্মণ জিজ্ঞাসা করিল, “তোমার শিষ্য কি জাতি?” “আজ্ঞা, তন্ত্রবায়।” “বাবাজী, তোমার মঙ্গল হউক, আমি শূদ্রের গৃহে অন্ন গ্রহণ করিব কি প্রকারে?” “ফলাহার করিবেন; উত্তম চিড়া, ঘন ক্ষীর, বাথানের দধি, মর্ত্তমান রম্ভা এবং গোল্লা।”

 বৈরাগীর সৃক্কণী বহিয়া লালা গড়াইয়া পড়িল; ব্রাহ্মণ তাহা দেখিয়া আর হাস্য সম্বরণ করিতে পারিলেন না, তিনি মন খুলিয়া হাসিয়া উঠিলেন। বৈরাগীর শিষ্য পার্শ্বে দাঁড়াইয়াছিল, সে ঘন ঘন সৃক্কণী লেহন করিতেছে দেখিয়া,