পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৮৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
একাদশ পরিচ্ছেদ
৭৫

নাই, সেও গঙ্গার ধারে।” “চল দেখি, তাহাকে দেখিয়া আসি।”

 বিনোদিনী বৈষ্ণবী মালা লইয়াই নবাগতকে দেখিতে চলিল; তাহার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবেশী স্ত্রী পুরুষ অনেকেই চলিল। সকলে গঙ্গাতীরে গিয়া দেখিল যে হরিৎবর্ণ কোমল শম্পশয্যায় একটি গৌরবর্ণ যুবক পড়িয়া রহিয়াছে। যুবকের সর্ব্বাঙ্গে অস্ত্রাঘাতের চিহ্ন, তাহা বহু রক্তাক্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বস্ত্রখণ্ডে আবদ্ধ। মৃতদেহ মনে করিয়া কেহই তাহার নিকটবর্ত্তী হইল না, কেবল পাগলিনী তাহার পার্শ্বে গিয়া বসিল। সে আহত যুবকের দক্ষিণ হস্ত উঠাইয়া লইয়া কহিল, “মরে নাই, তোমরা দূরে দাঁড়াইয়া আছ কেন? মা, ইহাকে বাড়ী লইয়া চল।”

 পাগলিনীর নিকট আশ্বাস পাইয়া বৈষ্ণবী ধীরে ধীরে যুবকের নিকটে আসিল এবং তাঁহার মস্তক ক্রোড়ে উঠাইয়া লইল। সে পরীক্ষা করিয়া দেখিল যে যুবক সত্য সত্যই মরে নাই, তখনও ধীরে ধীরে শ্বাস বহিতেছে। বৈষ্ণবীর অনুরোধে দুই চারি জন পুরুষ আসিয়া আহত ব্যক্তিকে পরীক্ষা করিল, সকলেই বলিল যে হৃৎপিণ্ডের ক্রিয়া তখনও বন্ধ হয় নাই; তখন সকলে মিলিয়া যুবককে বৈষ্ণবীর গৃহে লইয়া গেল।

 যুবক তাহার গৃহে আসিলে বৈষ্ণবী তাহাকে নিজের পালঙ্কে শোয়াইল, এবং তাহার ক্ষত স্থান পরিষ্কার করিয়া