পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কারাকাহিনী

মুস্কিল ছিল, কয়েদীদের কম্বল ও বালিশ বদলাইয়া যাওয়ার খুব সম্ভাবনা ছিল, কারণ কম্বল বালিশ প্রত্যহ রৌদ্রে দিতে হইত। কয়েদীরা বোধ হয় এ নিয়ম প্রায়ই মানিয়া চলিত। জেলের বারাণ্ডাটি প্রত্যহ দুইবার পরিষ্কার করিয়া দেওয়া হইত।


কয়েকটী নিয়ম।

 জেলের কয়েকটী নিয়ম সকলেরই জানা উচিত। সন্ধ্যা ৫॥ টার সময় সমস্ত কয়েদীকে বন্ধ করিয়া রাখা হয়। রাত্রি ৮টা পর্য্যন্ত সকলে কথাবার্ত্তা বলিতে বা পড়াশুনা করিতে পারে। ৮ টার সময় সকলকেই শুইতে হয়। কথা বলিলে জেলের নিয়ম ভঙ্গ করা হয়। কাফ্রি কয়েদীরা এ নিয়ম যথাযথ পালন করে না। তাই রাত্রে তাহাদিগকে চুপ করাইবার জন্য প্রহরী ‘ঠুলা’, ‘ঠুলা’ বলিয়া চীৎকার করিয়া মাটিতে লাঠী ঠুকিত। কয়েদীদের ধূম পান নিষিদ্ধ ছিল। এই নিয়ম খুব কঠোরতার সহিত রাখিতে হইত। কিন্তু আমি দেখিতাম ধূম পানে অভ্যন্ত কয়েদীগণ লুকাইয়া এ নিয়ম ভঙ্গ করিত। সকালে সাড়ে পাঁচটার সময় শয্যা ত্যাগের ঘণ্ট। পড়িত। এই সময়ে প্রত্যেক কয়েদীকে শয্যা ত্যাগ করিয়া হাত মুখ ধুইয়া বিছানা গুটাইয়া লইতে হইত। তারপর ছয়টার সময় কুঠুরীর দ্বার খোলা। এই সময়ে সকলে গুটান বিছানার পাশে আসিয়া কায়দা মত দাঁড়াইত। তখন রক্ষক আসিয়া সকল কয়েদীকে গুণতি করিতেন। এইরূপে কুঠুরী বন্ধ করিবার সময়েও (সন্ধ্যাকালে) প্রত্যেক কয়েদীকে বিছানার পাশে আসিয়া দাঁড়াইতে হইত। জেলের দ্রব্য ছাড়া বাহিরের কোন দ্রব্যই কয়েদীর কাছে থাকা নিয়ম বিরদ্ধ। কাপড় ছাড়া অন্য কোন জিনিসই গবর্ণরের অনুমতি ব্যতীত সঙ্গে রাখা নিষিদ্ধ ছিল। সকল কয়েদীরই খাটের উপর একটী ছোট পকেট সেলাই করা থাকিত। তাহাতে