পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কারাকাহিনী।

কাপড় চোপড় রাখিবার জন্য এক একটি থলিও পাইলাম। এইবার আমাদিগকে নিজের নিজের কামরায় পাঠান হইল। তাহার আগে প্রত্যেককে আট আউন্স রুটীর টুকরা দিল। আমাদিগকে লইয়া যাওয়া হইল কিন্তু আফ্রিকার আদিম অধিবাসী কাফ্রিদের জেলে।

কাফ্রি ও ভারতবাসী।

 সেখানে আমাদের কাপড়ের উপর “N” ছাপ দেওয়া হইল, অর্থাৎ আমরা নেটীভ পঙ্‌ক্তিতে থাকিয়া গেলাম। আমি সকল দুঃখ সহিতেই প্রস্তুত ছিলাম, কিন্তু আমাদের অদৃষ্টে যে এত দুর্গতি আছে তাহা জানিতাম না। শ্বেতাঙ্গদের সঙ্গে রাখিল না, তাহাতে তেমন বিচলিত হই নাই, কিন্তু কাফ্রিদের সহিত থাকা বরদাস্ত করিতে পারিলাম না। ইহা দেখিয়া আমার মনে হইল, সত্যাগ্রহ সংগ্রাম যেরূপ মহৎ তেমনি ঠিক সময়ে তাহার আরম্ভ হইয়াছিল। তখন ইহাও প্রমাণ হইয়া গেল, যে আইন প্রণয়ন করা হইয়াছিল তাহা ভারতবাসীকে বিশেষভাবে লাঞ্ছিত করিবার মারাত্মক উপায় মাত্র। আমাদিগকে যে কাফ্রিদের সহিত একত্রে রাখা হইয়াছিল তাহাতে ভালই হইল। তাহাদের জীবন যাত্রার পদ্ধতি, রীতিনীতি ইত্যাদি জানিবার একটী প্রকৃষ্ট সুযোগ পাওয়া গেল। তাহা ছাড়া এ কথাও আমি কোনও মতেই সত্য বলিয়া গ্রহণ করিতে পারি না যে তাহাদের সহিত একত্রবাসে আমাদের নাকি অপমান হয়। তবুও সাধারণ রীতি অনুযায়ী বলিতে হয়, ভারতীয়গণকৈ পৃথক্‌ রাখাই উচিত। আমাদের কারাকক্ষের পার্শ্বেই কাফ্রিদের স্থান। তাহারা সেখানে ও বাহিরের মাঠে কান্নাকাটি করিতে থাকিত। আমরা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত ছিলাম, অর্থাৎ আমাদের দ্বারা কোনও প্রকার কাজ করাইয়া লওয়া হইত না, তাই আমাদের আলাদা আলাদা রাখা হইয়াছিল। নতুবা আমাদেরও একসঙ্গে