পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কারাকাহিনী।

ঐ কুঠরীতেই ঠাসা হইত। সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত ভারতবাসীকে কাফ্রিদের সহিত একত্র রাখা হইত।

 ইহাতে বাস্তবিক কোনও অন্যায় হয় কি না সে বিচার ছাড়িয়া দিলেও একথা বলিলেই যথেষ্ট হইবে যে এরূপ ব্যবস্থা অন্যায়। কাফ্রিরা ছিল অধিকাংশই বন্য; জেলের কাফ্রিদের কথা ত’ বলা বাহুল্য। তাহারা অতিশয় কলহপ্রিয় ও অপরিষ্কার ছিল, এবং বন্য পশুর ন্যায় থাকিত। এক একটি কুঠরীতে প্রায় ৫০।৬০ জনকে ঠাসা হইত। কখনও কখনও তাহারা ঝগড়া চীৎকার করিত, কখনও বা নিজেদের মধ্যে মারামারি করিত। এই অবস্থার মধ্যে পড়িয়া বেচারী ভারতবাসীর কিরূপ দুর্দ্দশা হইত, পাঠকগণ তাহা সহজেই অনুমান করিতে পারেন।

ভারতীয় অন্যান্য বন্দীগণ।

 সমস্ত জেলে আমরা ছাড়া আরও দুই চারি জন ভারতীয় বন্দী ছিলেন। তাঁহাদিগকে কাফ্রিদের সহিত একত্রে বন্ধ থাকিতে হইত। তবুও দেখিয়া ছিলাম, তাঁহারা প্রসন্নচিত্ত ছিলেন, এবং জেলের বাহিরের অর্থাৎ জেলে আসিবার আগের চেয়ে তাঁহাদের স্বাস্থ্য ভাল হইয়াছিল। তাঁহাদের উপর প্রধান জেলরের কৃপাদৃষ্টি পড়িয়াছিল। তাঁহারা কর্ম্মক্ষম ও দক্ষ ছিলেন, তাই তাঁহাদের জেলের ভিতরেই কাজ দেওয়া হইত। যেমন, ষ্টোরে, ‘মেশিন’ দেখা ইত্যাদি। এ সব কাজে তাঁহাদের অভ্যাস ও আগ্রহ ছিল। তাঁহারা আমাদের অনেক সহায়তা করিয়াছিলেন।

আবাসস্থান।

 থাকিবার জন্য আমাকে একটি কুঠরী দেওয়া হইয়াছিল। সেখানে তেরজন লোকের থাকিবার স্থান ছিল। ঘরের উপর লেখা ছিল, ‘ঋণদায়ে দণ্ডিত কৃষ্ণবর্ণ কয়েদী।” সম্ভবতঃ সেখানে দেওয়ানী মোকর্দ্দমায় দণ্ডপ্রাপ্ত