পাতা:মহাত্মা বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর জীবনবৃত্তান্ত.pdf/৩৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সময় করযোড়ে প্ৰাণহীন কাষ্ঠ-পুত্তলিকার ন্যায় আসনে দাড়াইয়া রহিয়াছেন। কতবার প্রেমে উন্মত্ত হইয়া নৃত্য করিতে করিতে তাহার বহিৰ্ব্বাস, কৌপিন খসিয়া পড়িয়াছে, কিছুমাত্র জ্ঞান নাই। এই বাড়ীতেই একদিন ব্ৰহ্মব্ৰত সাম শ্রমী মহাশয় তানপুরা সহযোগে সুমধুর স্বরে শ্ৰীমদ্ভাগবতের রাসপঞ্চমাধ্যায় গান করিয়া তাহাকে শুনাইয়াছিলেন ; তিনি শুনিয়া ভাবে বিভোর হইয়া অনেকক্ষণ ধরিয়া কাদিয়াছিলেন ; এবং পুস্তকখানি মস্তকোপরি স্থাপন করিয়া রাখিয়াছিলেন । কীৰ্ত্তনে কত সময় ভাবে অধীর হইয়া গড়াগড়ি দিতেন আর বলিতেন ;-“ইহলোকবাসী, পরলোকবাসী, স্বাগবাসী, নরকবাসী, সকল মনুষ্য, সকল জীবজন্তু, কীটপতঙ্গ, পশুপক্ষী যে যেখানে আছে সকলে আমাকে দয়া কর । আমি সকলেরই পায়ে নমস্কার করিতেছি । তোমরা সকলেই আমাকে আশীবৰ্বাদ কর-ইত্যাদি ।” তাহার সেই সুগভীর প্রাণগত আৰ্ত্তি, সেই দীনহীন কাঙ্গালিভাব, সেই বালকের ন্যায় সরল ক্ৰন্দন, দেখিলে পাষাণও গলিয়া যাইত। তাহাতে ধৰ্ম্মের যে ছবি দেখিয়াছি জীবনে আর তাহ দেখিব না ; উহা চির জীবনের সম্বল হইয়া রহিয়াছে । ধৰ্ম্মের জন্য, ঈশ্বরের জন্য সে অসীম ব্যাকুলতা আর কোথায় দেখিবি ? প্ৰেমাব তার শ্ৰীচৈতন্যপ্ৰভু যেমন বলিয়াছিলেন--- “নাগরিব নারিব হেথা রহিবারে আমি, দেখিবারে যাব আমি বৃন্দাবন ভূমি। এ ছার সংসারে আমি কেমনে রহিব, নন্দের দুলালে আমি কোথা গেলে পাব।” ইহার আৰ্ত্তি, ব্যাকুলত সেই প্রকারের ; এই ব্যাকুলতা লইয়া ইনি আজীবন যাপন করিয়াছেন।” *

  • জনৈক শিষ্যের উক্তি।

ser ru