পাতা:মহাত্মা বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর জীবনবৃত্তান্ত.pdf/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহাত্মা বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী । ঠািৰ৷ এই সময়ে তাহার গৃহে লক্ষ্মী-পূজা হইতেছিল। র্তাহার শোকার্জী-জননী তাহাকে পাইয়া ঘরে ডাকিয়া লইয়া গেলেন, এবং, দেবীর সম্মুখে তঁহার পায়ের উপর সটান হইয়া পড়িয়া কঁাদিতে কঁাদিতে পুনরায় তাহাকে উপবীত গ্রহণের জন্য জেদ করিতে লাগিলেন । জননীর পাষাণভেদী-আৰ্ত্তনাদ তখন তঁাহাকে নিতান্ত অধীর করিয়া তুলিল। তঁহার ন্যায় মাতৃ-ভক্ত সন্তানের পক্ষে মাতার তৎকালের সেই অবস্থা সহ করা কিরূপ ক্লেশকরা হইয়াছিল, তাহা ভাষায় ব্যক্তি করা যায় না । সেই ক্লেশ নিবারণের কোন উপায়ও ছিল না ; তিনি ধৰ্ম্ম-বিশ্বাসেই জননীর মৰ্ম্মান্তিক ক্লেশের কারণ হইয়াছিলেন । কিন্তু আর সহ্য করিতে পারিলেন না। জননীর ক্লেশ দর্শনে মূচ্ছিত হইয়া ভূপতিত হইলেন। সেই সমযের অবস্থা সম্যক প্রকাশ করা কঠিন। এই ঘটনায় আত্মীয় স্বজন সকলেরই হৃদয় নিতান্ত আহত হইল । তৎপর মূৰ্ছা দূর হইলে তিনি বলিলেন—“যদি আমাকে পুনর্বার উপবীত গ্ৰহণ করিতে হয় তাহা হইলে নিশ্চয়ই আমার মৃত্যু ঘটিবে। আমি আর এই অসত্য ধারণ করিতে পরিব না।” পুত্রের এইরূপ কাতরতা দর্শনে মাতৃস্নেহ উথলিয়া উঠিল। তিনি আর জেদ করিলেন না, পুত্রকে সাত্ত্বিনা দিয়া বলিলেন--“তোমাকে আর উপবীত গ্ৰহণ করিতে হইবে না, উপবীত গ্রহণের পূর্বে এতোমার যে অবস্থা ছিল এখনও তোমার সেই অবস্থা হইল। আমি মনে করিব তোমার উপবীত হয় নাই ।” । “র্তাহার চরিত্রে কোমলত্ব ও পৌরুষ মিশিয়া গিয়াছিল। এক দিক হইতে সেই চরিত্রের ভক্তি, প্রেম ও বিনয়, ফুল্ল-পুষ্পের ন্যায় মনোহর দেখাইতেছিল, অন্য দিক হইতে সে চরিত্রের দৃঢ়ত্ব বিস্ময়োৎপাদন করিতেছিল। এক দিকে উহাকে পাহাড়ের ন্যায়। ঋজু, বিরাট বলিয়া মনে হইতেছিল, অন্য দিকে অলি-গুঞ্জরিত ফুলময় প্ৰতীয়মান হইতেছিল।”