পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/২০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাদ্রিসাহেবের সহিত বিচার S)ዓ@ সকল পৃথক পৃথক কালে উৎপন্ন হইয়া থাকে। ইহা কেমন করিয়া সম্ভব হইতে পারে ? রামমোহন রায় এই আপত্তির উত্তরে বলিতেছেন যে, পরমেশ্বর কালাতীত । পদার্থ সকল কালাধীন । যে কালে যে বস্তুর উৎপত্তি, সেইকালে সেই বস্তু, পরমেশ্বরের নিত্য ইচ্ছায় উৎপন্ন হইয়া থাকে। ইহাতে র্তাহার ইচ্ছার নিত্যতা বিষয়ে কোন আপত্তি হইতে পারে না । অর্থাৎ যে পদার্থ যখনই কেন উৎপন্ন হউক না, তাহার উৎপত্তি পরমেশ্বরের অনাদি অনন্তকালস্থায়ী ইচ্ছা হইতেই হয়। আকাশ ও কালাদি কেমন করিয়া পরমেশ্বরের ন্যায় নিত্য হইতে পারে ? ন্যায়শাস্ত্রানুসারে দিক, কাল, আকাশ, পরমাণু প্ৰভৃতি নিত্য । পাদ্রিসাহেব এ মতে আপত্তি করেন । তিনি বলেন, পরমেশ্বর ভিন্ন আর কেহ নিত্য হইতে পারে না । রামমোহন রায় এ আপত্তির এইরূপ উত্তর করিতেছেন । প্ৰথম, দিক, কাল, আকাশ নাই, অথচ কোন পদার্থ আছে, ইহা মনে ভাবিতে পারা যায় না । দ্বিতীয়, দিক, কাল, আকাশের অভাব স্বীকার করিলে কোন বস্তুরই প্ৰমাণ হইতে পারে না । তৃতীয়, নিত্যত্ব ঈশ্বরেও যেমন, কালেও সেইরূপ। চতুর্থ, নিত্যত্ব জ্ঞান, কালজ্ঞানের সাপেক্ষ । রামমোহন রায় বলিতেছেন যে, ঈশ্বরকে খ্ৰীষ্টিয়ানেরা ও নৈয়ায়িকেরা উভয়েই নিত্য বলেন, অর্থাৎ তিনি সমুদয় কাল ব্যাপিয়া আছেন। যদি কাল নিত্য না হয়, ঈশ্বর নিত্য হইতে পারেন না । নিত্য শব্দের অর্থ এই যে, যাহার আদি নাই ও অন্ত নাই। ঈশ্বর এবং কাল উভয়ের পক্ষেই এই অর্থ। ঈশ্বরের নিত্যত্বজ্ঞান, কালজ্ঞানের সাপেক্ষ ।