পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৭.৬ মহাত্মা রাজা রামমোহন রায়ের জীবনচরিত পরমাণু সম্বন্ধে রাজা যাহা বলিয়াছেন, তাহার সারমর্ম এই ;- ক্রিয়া ও গুণের সহিত কৰ্ত্তার সম্বন্ধকে সমবায় বলে । সেই সম্বন্ধে জগৎকৰ্ত্তা ঈশ্বরে জগৎকর্তৃত্ব রহিয়াছে। কর্তৃত্ব না থাকিলে কৰ্ত্তা শব্দ প্রয়োগ হয় না । ইহা সকল মতসিদ্ধ। প্ৰত্যক্ষসিদ্ধ এই জগতের অতি সূক্ষ্মতম, অবয়ব, ইহার সমবায়ী কারণ । তাহার নাশ অসম্ভব। পৃথিব্যাদির সূক্ষ্মতম ভাগকে পরমাণু বলে । অবয়বরাহিত পরমেশ্বরকে অথবা অভাবকে জগতের বা পরমাণুর সমবায়ী কারণ বলা যাইতে পারে না। অতএব, পরমাণু জন্য হইতে পারে না। পরমাণু সকল, ঈশ্বরেচ্ছায়, পৃথক পথক। দেশে, পৃথক পৃথক কালে, পৃথক পৃথক আকারে, একত্র হইয়া নানাসৃষ্টি হইতেছে। প্ৰত্যক্ষ দেখিতেছি যে, জ্ঞানবিশিষ্ট কৰ্ত্তা, দ্রব্যসংযোগে কাৰ্য্য সম্পন্ন করিতেছেন । সকল মতেই পরমেশ্বরকে জ্ঞানময় জগৎকৰ্ত্তা বলিয়া স্বীকার করা হয়। অতএব, পরমাণু, কাল ও আকাশের সহযোগে তাহার সৃষ্টি-কাৰ্য্য চলিতেছে । জীবের ন্যায় জড়ের সাহায্যে ঈশ্বর। কাৰ্য্য করেন বলিলে, ঈশ্বর ও জীব, বড় ঈশ্বর ও ছোট ঈশ্বর হয় কি না ? পাদ্রিসাহেব ন্যায়শাস্ত্রের মতে আর একটি এই দোষ দিয়াছিলেন যে, জীব। যেমন জড়ের সাহায্যে দ্রব্য সকল প্ৰস্তুত করিতেছে, সেইরূপ, যদি এমন বলা হয়, পরমেশ্বরও জড়ের সাহায্যে সৃষ্টিকাৰ্য্য করিতেছেন, তাহা হইলে পরমেশ্বর ও জীব উভয়কেই ঈশ্বর বলিতে হয় ; কেননা, উভয়ের কাৰ্য্যই এক প্রকার। উভয়ের মধ্যে প্ৰভেদ কেবল এই যে, একজন বড় ঈশ্বর, আর একজন ছোট ঈশ্বর ।