পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/২২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৯২ মহাত্মা রাজা রামমোহন রায়ের জীবনচরিত র্তাহারা অবগত আছেন যে, পাঠান মৎস্যের গর্ভে যত ডিম্ব হয়, সমগ্ৰ মনুষ্যজাতির মধ্যে মানুষ্যের সংখ্যা তাহা অপেক্ষা অল্প। কিন্তু মনুষ্য ক্ষমতাতে পাঠান মৎস্য অপেক্ষা বহুগুণে শ্রেষ্ঠ । সুতরাং মনুষ্যশব্দ জাতিবাচক রূপে ব্যবহার করিলে কোন দোষ হয় না । আমরা প্ৰত্যক্ষ দেখিতেছি যে, মনুষ্যজাতির মধ্যে দেবদত্ত, যজ্ঞদত্ত প্ৰভৃতি সকলে, যদিও ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি, কিন্তু তাহদের সকলেবই মধ্যে এক মনুষ্য স্বভাব বর্তমান। সেইরূপ, মনুষ্যজাতির ন্যায় ঈশ্বরজাতির অন্তৰ্গত, তিন ব্যক্তি । তাহারা পৃথক পৃথক হইলেও ঈশ্বর স্বভাব তাহাদের তিন জনের মধ্যেই বৰ্ত্তমান ; অর্থাৎ পিতাঈশ্বর, পুত্ৰঈশ্বর ও হোলিগোষ্টঈশ্বর। পাদ্রিসাহেবের ঈশ্বরকে কি এইরূপে এক বলিয়া থাকেন ? এরূপ র্যাহাঁদের মত, তাহারা কিরূপে সাকারবাদী হিন্দুকে বহু ঈশ্বরবাদী বলিয়া দোষ দেন ও উপহাস করেন ? হিন্দুরা অনেকেই বলিয়া থাকেন যে, ঈশ্বর তিন অপেক্ষা অধিক হইলেও, ঈশ্বরত্ব বিষয়ে সকলেই এক । পাদ্রিাসাহেব বলিতেছেন যে, যেমন দেহ ও আত্মার সম্বন্ধ,-দেহ ও জীবনের সম্বন্ধ, আমরা বুঝি না। ;-বৃক্ষলতাদি মৃত্তিকা হইতে রস আকর্ষণ করিয়া বৃদ্ধিপ্ৰাপ্ত হইতেছে, কি স্তু কেমন করিয়া হয়, তাহা আমরা বুঝি না ; সেইরূপ, পিতা, পুত্র ও হোলিগোষ্টি এই তিনি এক। একে তিন কেমন করিয়া হয়, তাহা আমরা বুঝি না ; কিন্তু বিশ্বাস করি। রামমোহন রায় এ কথার উত্তরে বলিতেছেন যে, বুদ্ধির অতীত অথচ প্ৰত্যক্ষসিদ্ধ বিষয় অবশ্য মানিতে হয় । কিন্তু খ্ৰীষ্টিয়ানদের ত্ৰিত্ববাদ, প্ৰত্যক্ষসিদ্ধ বিষয় নহে, সুতরাং উহা বিশ্বাস করিতে পারি না। রামমোহন রায় স্থানান্তরে এই যুক্তির উত্তরে বলিয়াছেন যে, হিন্দুরাও পুরাণে বর্ণিত অদ্ভুত, অলৌকিক ও অসম্ভব ব্যাপার সকল ঐ কথা বলিয়া সমর্থন করিতে পারেন। তঁাহারা বলিতে পারেন যে, যেমন দেহ ও আত্মা এবং দেহ ও জীবনের সম্বন্ধ