পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পণ্ডিতগণের সহিত বিচার Q8) পর পর শাস্ত্ৰে থাকিলে, পরবত্তী শাস্ত্রের মত সে বিষয়ে গ্ৰহণীয় নহে। যদি এমন কোন মত পরবত্তী শাস্ত্রে থাকে, যাহা পূর্বের শাস্ত্ৰেও আছে, তাহা হইলে তো সে মত অবশ্যই গ্রাহ্য হইবে ; কিন্তু যদি পূর্ববৰ্ত্তী শাস্ত্রে সে মত না পাওয়া যায়, এবং তাহার বিরুদ্ধমতও কিছু না থাকে, সে স্থলে পরবত্তী শাস্ত্রের মত অবশ্যই গ্ৰহণীয়। সেইরূপ আবার সমানরূপ মান্য দুই শাস্ত্ৰে আপাতবিরুদ্ধ বচন থাকিলে যেরূপ ব্যাখ্যা দ্বারা বচন সকলের সামঞ্জস্য রক্ষা হয়, তাহাই প্ৰকৃত ব্যাখ্যা বলিয়া গণ্য হইবে। শাস্ত্রের বিধি সকল দুই ভাগে বিভক্ত ;-সামান্য বিধি ও বিশেষ বিধি । শাস্ত্রের বিরোধভঞ্জন করিবার জন্য ইহাও একটি উপায় । ইহার একটি দৃষ্টান্ত দেওয়া যাইতেছে। শ্রুতিতে কোন স্থানে আছে, হিংসা করিবে না । আবার অন্য স্থানে আছে, অশ্বমেধ যজ্ঞ করিবে । অশ্বমেধ যজ্ঞ করিলে অশ্ববধ করিতে হয় । সুতরাং হিংসা করিবে না, এই বিধির সহিত সামঞ্জস্য হইতেছে না। তবে ইহার মীমাংস কি ? মীমাংসা এই যে, হিংসা করিবে না, ইহা সামান্য বিধি । অশ্বমেধ যজ্ঞ করিবে, ইহা বিশেষ বিধি । সুতরাং স্থির হইল যে, বিশেষ বিধির যে সকল স্থল, তাহা ভিন্ন অন্যান্য স্থলে সামান্য বিধি পালনীয়। অশ্বমেধ যজ্ঞাদি ভিন্ন অন্যান্যস্থলে হিংসা নিষিদ্ধ । আর একটি নিয়ম এই যে, গ্রন্থের উপক্রম ও উপসংহার বিচারপূর্বক শাস্ত্রীয় বিধি নিষেধ নিৰ্দ্ধারণ করিবে ; অর্থাৎ উপক্ৰমণিকায় গ্রন্থের উদ্দেশ্য বিষয়ে কি লেখা হইয়াছে, এবং উপসংহারেও তদ্বিষয়ে কি বলিয়া শেষ করা হইতেছে, এই দুইটি দেখিলে শাস্ত্রের প্রকৃত তাৎপৰ্য্য অনুধাবন করা যায়। এতদ্ভিন্ন, আর সকল অর্থবাদ ও স্তুতিবাদ বলিয়া ত্যাগ করিবে। অর্থবাদ, স্তুতিবাদ, নিন্দার্থবাদ প্রামাণ্য নহে। ফলশ্রুতি মাত্রেই অর্থবাদ, উহ! প্ৰামাণ্য নহে। তদ্রুপ মাহাত্ম্যবাচক বচনও প্রামাণ্য নহে। যেমন,