পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩১২ মহাত্মা রাজা রামমোহন রায়ের জীবনচরিত নিরাকার ব্রহ্মবিষয়ক উপদেশে উপনিষদ পূর্ণ। তবে রামমোহন রায় নূতন কি করিয়া গিয়াছেন ?? জাতি, বৰ্ণ, সম্প্রদায়নির্বিবশেষে নিরাকার পরমেশ্বরের সার্বভৌমিক উপাসনাপ্রচার, এইটিই তাহার নূতন । রামমোহন রায় বলিলেন, “ব্ৰিাহ্মণ কি চণ্ডাল, হিন্দু কি যবন, সকলে এস, ভ্ৰাতৃবন্ধনে বদ্ধ হইয়া এক নিরাকার পরমেশ্বরের উপাসনা কর । যে জাতি, যে বৰ্ণ, যে সম্প্রদায়ভুক্ত লোক কেন হও না, সকলে এস, সার্বভৌমিকভাবে একমাত্র নিরাকার, অগম্য, অনাদ্যনন্ত পরব্রহ্মের পূজা কর।” মহাজনগণের জীবনবৃত্ত পাঠ করিলে দেখা যায় যে, নানা মহৎভাবের মধ্যে একটি ভাব প্ৰধান হইয়া তাহাদিগের জীবনপথের নেতাস্বরূপ হয়। তাহারা যাহা কিছু বলেন, যাহা কিছু করেন, সেই ভাবটি তন্মধ্যে মধ্যবিন্দু হইয়া অবস্থিতি করে । “আত্মাতে পরমাত্মার দর্শন” উপনিষদ কারদিগের ইহাই প্ৰধান ভাব । “বিশ্বব্যাপী মৈত্রী” বুদ্ধদেবের ইহাই প্ৰধান ভাব । “আপনাকে আপনি জানি,” সক্রেটিসের ইহাই প্ৰধান ভাব । “পৃথিবীতে স্বৰ্গরাজ্য”। ঈশার ইহাই প্ৰধান ভাব। “একমাত্ৰ ঈশ্বরের পূজা, অপর সকল দেবপূজার প্রতিবাদ” মহম্মদের ইহাই প্ৰধান ভাব। “ধৰ্ম্মচিন্তায় ব্যক্তিগত স্বাধীনতা” লুথারের ইহাই প্ৰধান ভাব । “ভক্তিতেই মুক্তি” শ্ৰীচৈতন্যের ইহাই প্ৰধান ভাব । “মানবপ্রকৃতির সৰ্ব্বাঙ্গীণ উন্নতি” থিওডোর পার্কারের ইহাই প্ৰধান ভাব । সেইরূপ রাজা রামমোহন রায়ের প্রধান ভাবি “সার্বভৌমিক উপাসনা ।” কেবল তাহাই নহে ; সেই সার্বভৌমিক উপাসনার জন্য সমাজ প্রতিষ্ঠা ; এটিও জগতের পক্ষে নূতন । দ্বিতীয় ভাবটি প্রথম ভাবেরই অন্তভূক্ত । এই ভাবের মৌলিকত্ব ( originality ) কেহ অস্বীকার করিতে 3