পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সামাজিক আন্দোলন \O e সতীদাহ নিবারণে নিশ্চেষ্টতা সতীদাহের বিরুদ্ধে হয়োরোপীয় কি দেশীয় অনেকেই কিছু বলিতেন না । এমন কি, খ্ৰীষ্টধৰ্ম্মপ্রচারক অনেক পাদ্রিসাহেব উহার বিরুদ্ধে বাঙনিস্পত্তি করিতেন না। র্তাহারা মনে করিতেন যে, গবৰ্ণমেণ্ট যখন সতীদাহ নিবাবণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করিতেছেন না, তখন উক্ত প্রথার বিরুদ্ধে কথা বলিলে গবৰ্ণমেণ্টের বিরুদ্ধে কথা বলা হইবে । বাস্তবিক এরূপ আশঙ্কার একটি কারণ ঘটিয়াছিল। ডাক্তার জনস নামক এক জন সাহেব এইরূপ কোন কারণে এদেশ হইতে তাড়িত হইয়াছিলেন ; সুতরাং তঁাহারা ভাবিতেন যে, সতীদাহের প্রতিবাদ করিলে, তাহারাও ঐ রূপে তাড়িত হইবেন । গবৰ্ণমেণ্টের উচ্চ পদাধিষ্ঠিত সুশিক্ষিত ও ধাম্মিক কৰ্ম্মচারীদের মধ্যে অনেকেই উক্ত কুপ্ৰথা নিবারণে হস্তক্ষেপ করা অন্যায় মনে করিতেন । তাহারা বলিতেন যে, ধৰ্ম্মসম্বন্ধে দেশীয়দিগের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রক্ষা করিতে গবৰ্ণমেণ্ট বাধ্য ; এবং এরূপ আশা করিতেন যে, সুশিক্ষা ও জ্ঞানের উন্নতি সহকারে উঠু ক্ৰমশ: রহিত হইয়া যাইবে । পাঠকবর্গের স্মরণ আছে যে, রামমোহন রায় যৌবনকালেই কোন স্ত্রীলোকের সহমরণ ব্যাপারে ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুরতা দেখিয়া প্ৰতিজ্ঞা করিয়াছিলেন যে, যত দিন পৰ্য্যন্ত না উক্ত প্রথা রহিত হয়, ততদিন তিনি তজন্য প্ৰাণপণে চেষ্টা করিবেন । তিনি সেই প্ৰতিজ্ঞ কখনও বিস্মৃতি হন নাই। উপদেশ, পুস্তক প্রচার, গবৰ্ণমেণ্টকে পরামর্শ দান, ইত্যাদি বিবিধ উপায়ে তিনি ভারত ভূমি হইতে নারীহত্যারূপ মহাপাত ক বিদূরিত করিবার জন্য, নিরন্তর যত্নশীল ছিলেন !