পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৫৬ মহাত্মা রাজা রামমোহন রায়ের জীবনচরিত “ন বুদ্ধিভেদং জনয়েদজ্ঞানাং কৰ্ম্মসঙ্গিনাং ।” রামমোহন রায় এ কথার উত্তরে বলিতেছেন। সহমরণে স্ত্রীলোককে প্ৰবৃত্ত করিবার অভিপ্ৰায় কি, তাহা এখন বিশেষরূপে ব্যক্ত হইল । বিশিষ্ট ব্যক্তিদের স্ত্রীলোকেরা অত্যন্ত বিষয়সুখে আসক্তা । সহগমন না। করিলে তাহদের ‘ইতোত্ৰষ্টস্ততো নষ্ট” হইবে, এই ভয়ে স্বর্গের প্রলোভন দেখাইয়া স্বামীর সহিত তাহদের আযুঃশেষ করেন। কিন্তু আমরা ইহা নিশ্চয় জানি যে, কি পুরুষ, কি স্ত্রীলোক, স্বভাবতঃ কাম, ক্ৰোধ, লোভে জড়িত। কিন্তু শাস্ত্রানুশীলন এবং সৎসঙ্গদ্বারা ক্ৰমশঃ ঐ সকল দোষের দমন হইতে পারে, এবং তাহারা উত্তম পদপ্ৰাপ্তির যোগ্য হইতে পারেন। এই জন্য আমরা কি স্ত্রীলোক, কি পুরুষ, সকলকে অধম শারীরিক সুখের কামনা হইতে নিবৃত্ত করিবার চেষ্টা করি । স্বৰ্গে গমন করিয়া স্বামীর সহিত অভ্যস্ত স্ত্রী-পুরুষের ব্যবহারপূর্বক কিছুকাল বাস করিয়া পুনরায় অধঃপতিত হইয়া গর্ভের মলমূত্ৰঘটিত যন্ত্রণাভোগ কর, এমন উপদেশ আমরা কদাপি প্ৰদান করি না । শাস্ত্রে এইরূপ বিধি দিয়াছেন যে, স্ত্রীলোক ও পুরুষের মধ্যে র্যাহাঁদের ব্ৰহ্মাজজ্ঞাসা উৎপন্ন হয়, তাহারা পরমেশ্বরের শ্রবণমনন করিয়া সাংসারিক অত্যন্ত দুঃখ হইতে মুক্ত হইবেন । আর, র্যাহাদের ব্রহ্মজিজ্ঞাসা হয় নাই, তাহদের পক্ষে শাস্ত্রোব আদেশ এই যে, কামনারহিত হইয়া নিত্য নৈমিত্তিক কৰ্ম্মানুষ্ঠানদ্বারা চিত্তশুদ্ধিপূর্বক জ্ঞানাভ্যাস করিবেন। এতএব, শাস্ত্ৰানুসারে, বিধবাদিগকে নিন্দিত এবং অচিরস্থায়ী যে স্বৰ্গসুখ, তাহা হইতে নিবৃত্ত করিতে প্ৰয়াস পাই, এবং যে জ্ঞানাভ্যাসদ্বারা পরমপদ লাভ হয়, তাহাতে প্ৰবৃত্ত করিতে যত্ন করি । নিষ্কামকৰ্ম্মানুষ্ঠানদ্বারা চিত্তশুদ্ধিপূর্বক পরমেশ্বরের শ্রবনমনন করিয়া বিধবা নারী পরমপদ প্ৰাপ্ত হইতে পারেন । সুতরাং ব্ৰহ্মচৰ্য্যানুষ্ঠান