পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্বপুরুষ, মাতা-পিতা ও বাল্যকাল Σ ο তাহার পিতার প্রতি সম্মান প্ৰদৰ্শন করিয়া অথচ ঈষৎ হাস্যের সহিত আমাকে বলিলেন যে, আমার পিতা আমাকে একদিন বলিয়াছিলেন যে, “আমি আমার মতে স্বপক্ষে যে কোন যুক্তি বলি, তুমি প্ৰথমে একটি “কিন্তু’ বলিয়া তাহার উত্তর আরম্ভ কর।” সচরাচর তিনি ধৈৰ্য্যের সহিত পুত্রের কথা শুনিতেন, কিন্তু উক্ত দিবস বিরক্ত হইয়া তিরস্কার করিয়াছিলেন। কখন কখন তাহার ধৈৰ্য্যচ্যুতি হইত। রামমোহন রায় এই সময়ে ( প্ৰায় ষোড়শ বৎসর বয়সে ) প্ৰচলিত ধৰ্ম্মের বিরুদ্ধে “হিন্দুদিগের পৌত্তলিক ধৰ্ম্মপ্রণালী” নামে একখানি গ্ৰন্থ রচনা করিলেন । যখন পৌত্তলিকতার নিবিড় অন্ধকারে সমগ্ৰ দেশ নিমজিত, যখন পাশ্চাত্য জ্ঞান ও সভ্যতার একটি রশ্মি ও সেই অন্ধকার ভেদ করে নাই, যখন সমুদয় দেশের মধ্যে একটিও ইংরেজী বিদ্যালয় বা তদনুরূপ বঙ্গবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় নাই, তখন ইংরেজী ভাষানভিজ্ঞ, কেবলমাত্র পারসী ও সংস্কৃতজ্ঞ, এক ষোড়শবর্ষীয় হিন্দুবালক পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে গ্রন্থ রচনা করিল ! ইহারই নাম প্ৰতিভা ! তখন অবশ্য সেই পুস্তক মুদ্রিত ও প্রকাশিত করিবার সুবিধা ছিল না ; রামমোহন রায় কেবল উহ্য রচনা করিয়াছিলেন মাত্র । ইহাতে তাহার পিতা তাহার প্রতি অত্যন্ত বিরক্ত হইলেন । পিতাপুত্রের মধ্যে সদ্ভাবের আর কোন সম্ভাবনা থাকিল না । বামমোহন গৃহ পরিত্যাগ করিলেন। উপক্ৰমণিকায় তাহার যে পত্ৰ প্ৰকাশিত হইয়াছে, তাহাতে তিনি নিজে বলিতেছেন যে, তাহার বয়স তখন প্ৰায় ষোড়শ বৎসর। তিনি গৃহ পরিত্যাগ করিয়া ভারতবর্ষের নানা প্ৰদেশ ভ্ৰমণ করিলেন । বিভিন্ন প্ৰদেশ পরিভ্রমণকালে, তত্ৰত্য ধৰ্ম্মগ্রন্থ সকল অধ্যয়ন করিবার জন্য প্ৰচলিত বিভিন্ন ভাষা শিখিয়াছিলেন । সেই জন্য, পরিণত বয়সে, অনেক সময় তাহাকে 2