পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা রামমোহন রায়ের সর্বাঙ্গীন মহত্ব (ዽ o ዓ চাপিকান ও বাধা পাগড়ি পরিধান পূর্বক আগমন করেন। তিনি মনে করিতেন যে ব্ৰাহ্মসমাজ পরমেশ্বরের দরবার ; সুতরাং সেখানে সুন্দর পরিচ্ছদ পরিধান করিয়া আসাই কৰ্ত্তব্য । কথিত আছে, শ্ৰীযুক্ত দ্বারকানাথ ঠাকুর মহাশয় এক দিবস আফিস হইতে আসিয়া পুনর্বার পোষাক পরিধান কবিতে কষ্টবোধ হওয়ায়, ধুতি চাদরেই সমাজে আসিয়াছিলেন। রামমোহন রায় উহা দেখিয়া দুঃখিত হইলেন, এবং তেলিনীপাড়া নিবাসী শ্ৰীযুক্ত অন্নদাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়কে অনুরোধ করিলেন যে, তিনি দ্বারকানাথ বাবুকে তদ্বিষয়ে কিছু বলেন। অন্নদাবাবু জানিতেন যে, রামমোহন রায়ের অত্যন্ত চক্ষুলজ্জা, এবং সে জন্যই তিনি নিজে কিছু বলিতে পারিতেছেন না । সুতরাং তিনি র্তাহাকে বিশেষ করিয়া বলিলেন “মহাশয়ই কেন বলুন না ?” তিনি শিষ্যদিগের প্রতি অত্যন্ত স্নেহের সহিত ব্যবহার করিতেন । তাহাদিগকে “বেরাদার” বলিয়া সম্বোধন করিতেন । কেবল শিষ্যদিগকে কেন, প্ৰায় সকল লোককেই তিনি ঐ রূপ স্নেহ সম্ভাষণ করিতেন। অনেক সময় কোন আহলাদের কারণ উপস্থিত হইলে, প্ৰেমালিঙ্গন করিতেন। কোন শিষ্য র্তাহার কোন দুর্বলতা দেখিয়া বিদ্রুপ বা তিরস্কার করিলে তিনি যার-পর নাই। উদারভাবে তাহা গ্ৰহণ কবিতেন । তৎকালীন প্রথা অনুসারে তাহার বাবরী চুল ছিল ; চুলগুলির প্রতি আতিশয় যত্ন করিতেন ; প্ৰতিদিন স্মানের পর দর্পণের সম্মুখে কেশবিন্যাসে অনেক সময় নষ্ট হইত। তজ্জন্য এক দিবস তারাচাঁদ চক্ৰবৰ্ত্তী র্তাহাকে উপহাস করিয়া বলিলেন “মহাশয় । “কত আর সুখে মুখ দেখিবে দর্পণে” এই গীতটি কি কেবল পরের জন্যই রচনা করিয়াছিলেন ?” রামমোহন রায় লজ্জিত হইয়া বলিলেন “বেরাদার ! ঠিক বলিয়াছ, ঠিক বলিয়াছ।”