পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা রামমোহন রায়ের ধৰ্ম্মবিষয়ক মত (GS “ওয়াহ দতুলওজুদ এবং ‘হামাহউস্তু’ ; এ কথার অর্থ এই যে, কেবল একমাত্ৰ সত্যপদার্থ আছে ;-এই সকলই ঈশ্বর । ইহা শুদ্ধাদ্বৈতবাদ, শঙ্করের অনুরূপ মত। তবে, শঙ্করের মত বেদের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং এই সুফী মোয়াহ হেদীদিগের মত কোরাণশাস্ত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত। আর একদল সুফী ছিলেন । তাহাদিগের নাম ‘সুফী মোসায়েখ’ । র্তাহারা বিশিষ্টভাবে ‘ওয়াহাদৎ’ বা পরমেশ্বরের একত্ব মানিতেন । র্তাহারা বলিতেন, “ওয়াহাদতুল সহৃদ-‘হামাহ আজ উসৎ’ ইহার অর্থ, পরমেশ্বরের স্বরূপ ও র্তাহার প্রকাশের একত্ব -এই সকল যাহা কিছু পরমেশ্বরের। ইহার রামানুজের ন্যায় বিশিষ্টাদ্বৈতবাদী বা নিম্বার্কের ন্যায় দ্বৈতাদ্বৈতবাদী ছিলেন। তবে, পূর্বে বলা হইয়াছে যে, ইহাদের মত কোরাণের উপর প্রতিষ্ঠিত। সকল মোয়াহ হেন্দীই মুসলমান ; তাহারা কোরাণ ও পয়গম্বরে বিশ্বাস করেন। কিন্তু গোড়া মুসলমানেরা ষেরূপে কোরণ ব্যাখ্যা করিয়া থাকেন, তাহা তাহদের মতে ভ্ৰমাত্মক । তাহারা কোরাণ এবং পয়গম্বরের উক্তির আধ্যাত্মিক, রূপক, দার্শনিক, অথবা যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা করিয়া থাকেন। মুসলমান স্মৃতি সরিয়ৎ অনুসারে যে সকল কৰ্ম্মকাণ্ড হইয়া থাকে, তাহা ইহারা অনেক ছাড়িয়া দেন। অনেক পরিবাৰ্ত্তন করিয়া যুক্তিসঙ্গত করিয়া লন । একেবারে অগ্ৰাহ করেন না। কিন্তু র্যাহ্বারা ‘মজুব’ অর্থাৎ “পরমহংস” তাহারা একেবারেই সরিয়াৎ মানেন না । আরবি ভাষায় লিখিত ধৰ্ম্মতত্ত্ব বিষয়ক গ্রন্থে ও দর্শনশাস্ত্ৰে নানা ধৰ্ম্মমতের বিচার আছে। সেই সঙ্গে সঙ্গে মোয়াহ হেদী ও মতাজলদিগের মতের বিচার আছে। রাজা যে মানাজারাতুল আদিয়া অর্থাৎ বিবিধ ধৰ্ম্মের বিচার নামে আরবি ভাষায় গ্ৰন্থ লিখিয়াছিলেন, বোধ হয় তাহাতে তিনি কতক পরিমাণে আরবি দর্শনশাস্ত্রের মত প্ৰকাশ করিয়াছিলেন।