পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Gr8 মহাত্মা রাজা রামমোহন রায়ের জীবনচরিত মধ্যবৰ্ত্তিবাদীরা বলেন যে, জগদীশ্বর স্বাভাবিক নিয়মে জগতের কাৰ্য্য পরিচালিত করিতেছেন । স্বাভাবিক কাৰ্য্যকারণসম্বন্ধদ্বারা জগতের পদার্থ সকলের অস্তিত্ব ও ক্রিয়া সম্ভব হইতেছে, “এ বিষয়ে জীবের কর্তৃত্বের প্রয়োজন হয় না । সুতরাং এস্থলে এই প্রশ্ন উপস্থিত হইতেছে যে, পয়গম্বর বা প্রফেট দিগের নিকট পরমেশ্বর কি স্বয়ং প্ৰকাশিত হন, অথবা অন্য কোন ব্যক্তির মধ্য দিয়া প্ৰকাশিত হইয়া থাকেন ? পয়গম্বরদিগের যে ঈশ্বরজ্ঞান, তাহা অপরোক্ষ জ্ঞান, না পরোক্ষ জ্ঞান ? যদি বল যে অপরোক্ষ জ্ঞান, ঈশ্বর স্বয়ং পয়গম্বরদিগের নিকট অব্যবহিতরূপে প্ৰকাশিত হন, তাহা হইলে সপ্ৰমাণ হইতেছে যে, মধ্যবৰ্ত্তী ব্যতীত পরমেশ্বর মানুষ্যের নিকট প্ৰকাশিত হইতে পারেন। অর্থাৎ মানবাত্মার উপযুক্ত অবস্থায়, মনুষ্য অপরোক্ষ ভাবে, পরমেশ্বরের জ্ঞান লাভ করিতে পারে ; অথবা এরূপও বলা যায় যে, পরমেশ্বর মানুষ্যের আত্মাতে প্ৰকাশিত হন। তাহা হইলে, ঈশ্বর ও মানুষের মধ্যে মধ্যবৰ্ত্তীর প্ৰয়োজন থাকিল না। আর যদি বল যে, পয়গম্বরদিগের নিকটও অন্য ব্যক্তির মধ্য দিয়া তিনি প্ৰকাশিত হন, তাহা হইলে মধ্যবৰ্ত্তীর আবার মধ্যবৰ্ত্তীর প্রয়োজন। মিডিয়ামেব নিকট প্ৰকাশিত হইবার জন্য, অপর মিডিয়ম আবশ্যক । এইরূপে অনাদি পরম্পরা আসিয়া পড়ে । সুতরাং সিদ্ধান্ত হইল যে, মধ্যবৰ্ত্তিবাদ অযুক্তিসিদ্ধ । প্ৰকৃতির অন্তৰ্গত অন্যান্য বিষয়ের ন্যায় পয়গম্বর এবং শাস্ত্ৰ, স্বাভাবিক । জনসাধারণের শিক্ষার জন্য অলৌকিক রূপে পয়গম্বরদিগের আবির্ভাব হয় না। পরমেশ্বর স্বাভাবিক প্ৰণালীতে বিশ্বকাৰ্য্য পরিচালিত করিতেছেন । যেরূপ কাৰ্য্যকারণ সম্বন্ধে সকল ঘটনা সম্বদ্ধ, মহাপুরুষ ও শাস্ত্ৰ সেই স্বাভাবিক প্ৰণালীর অন্তৰ্গত ভিন্ন আর কিছুই নহে । রাজা মধ্যবৰ্ত্তিবাদের বিরুদ্ধে আর একটি কথা বলিতেছেন যে,