পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৬০ মহাত্মা রাজা রামমোহন রায়ের জীবনচরিত অনেকগুলি অহিতকর প্রথা প্ৰচলিত হইয়াছে ; যেমন সতীদাহ, শিশুহত্যা ইত্যাদি। রাজা বলিয়াছেন, হিন্দুরা দয়াবান জাতি বটে, কিন্তু শৈশবকাল হইতে এই সকল ভীষণ ও নৃশংস কাণ্ড দেখিয়া, এই সকল বিষয়ে তাহদের হৃদয় কঠিন হইয়া গিয়াছে। বাজা এইরূপ সামাজিক অকল্যাণ, বৃটিশ গভর্ণমেণ্টের আইনদ্বারা রহিত করিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন । সতীদাহ নিবারণ তাহার প্রধান দৃষ্টান্ত । রাজা জানিতেন, এই সকলের মূল অজ্ঞান ও কুসংস্কার । অজ্ঞান ও কুসংস্কার হইতে অনিষ্টকর কদাচারের উৎপত্তি। সেই জন্য তিনি সুশিক্ষা ও জ্ঞানবিস্তার দ্বারা কুসংস্কারনাশের উদযোগ করিয়াছিলেন , অনিষ্টকর। দেশাচারের অধীনতা স্বীকার করার বিরুদ্ধে লেখনী চালনা করিয়াছিলেন । এইরূপে তিনি লোকের বিবেচনাশক্তি ও নৈতিক জ্ঞানকে জাগ্ৰত করিতে যত্ন করিতেন । তিনি সুস্পষ্টরূপে বুঝিয়াছিলেন যে, লোকের জ্ঞানোন্নতি ও নৈতিক বুদ্ধির বিকাশ ভিন্ন সামাজিক কদাচার নিচয়ের বিনাশের সম্ভাবনা নাই । ষষ্ঠ ;-এদেশে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে নীতিবিরুদ্ধ কদৰ্য্য অনুষ্ঠান প্ৰচলিত আছে। ধৰ্ম্মের নামে অনেক অধৰ্ম্ম অনুষ্ঠিত হইতেছে। এ সকলের বিরুদ্ধে রাজা লেখনী চালনা করিয়াছিলেন । তিনি লোকের নৈতিক বুদ্ধি জাগ্ৰত করিতে, ঈশ্বরাদেশ ও প্রাচীন শাস্ত্ৰ সকলের ভক্তি বুদ্ধি করিতে, দেশের লোকের মধ্যে ঈশ্বর সম্বন্ধে যে হীন ও নিকৃষ্ট ভাব রহিয়াছে, তদ্বিরুদ্ধে ঈশ্বরসম্বন্ধীয় প্রকৃত জ্ঞান ও প্ৰকৃত ভক্তি প্রচার করিতে যত্ন কবিয়াছিলেন । ঈশ্বৰ সম্বন্ধে লোকের যে সকল হীনভাব দেশে প্ৰচলিত, তিনি কখনও কখনও ফরাশী দেশীয় সুপ্ৰসিদ্ধ লেখক ভলটেয়ারের ন্যায় তদ্বিরুদ্ধে সুতীক্ষ্ম শ্লেষ ও বিন্দ্ৰপাত্মক ভাষায় লেখনী চালনা কবিয়াছিলেন ।