পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭৩০ মহাত্মা রাজা রামমোহন রায়ের জীবনচরিত যাইতাম। তিনি সচরাচব উক্ত সময়ে মধু দিয়া রুটী খাইতেন। একদিন প্ৰাতঃকালে তাহাব আহাবের সময়ে মধু দিয়া তিনি রুটী খাইতে খাইতে আমাকে বলিলেন, “বেবাদার, আমি মধু ও রুটী খাই তেছি, কিন্তু লোকে বলে, আমি গোমাংস ভোজন করিয়া থাকি।” কোন কোন দিন, আমি রাজার স্নানের সময়ে তাহার বাটীতে যাইতাম । তাহার স্নান বড় চমৎকার ছিল। তিনি স্নানেব পূব্বে সমস্ত শরীরে অধিক পরিমাণে সর্ষপতৈল মদন করিতেন। র্তাহার শরীরে তৈল গড়াইয়া পন্ডিত । তিনি বলবান পুরুষ ছিলেন। র্তাহার বক্ষঃস্থল প্রশস্ত ছিল। তাঙ্গার মাংসপেশী সকল শক্ত ছিল । তৈলমাদিত অনাবৃত দেহ, কটিদেশেব চতুষ্পার্শ্বে একখণ্ড বস্ত্ৰমাত্র ; তাহার এই প্রকার মূৰ্ত্তি দেখিয়া বালক বলিয়া আমাব মনে ভীতি সঞ্চার হইত। এই প্ৰকার বস্ত্ৰ পরিধান করিয়া, বলপূর্বক পদনিক্ষেপ করিতে করিতে তিনি উপর হইতে নীচে নামিয়া আসিতেন। সংস্কৃত, পাশী ও আরবী ভাষার কবিতা আবৃত্তি করিতে করিতে, তিনি একটি প্ৰকাণ্ড জলপূৰ্ণ টবে ঝাম্প প্ৰদান করিতেন। এই টবে তিনি এক ঘণ্টাব ও অধিককাল থাকিতেন । এই সময়ে তিনি ক্ৰমাগত র্তাহার প্ৰিয় কবিতাসকল আবৃত্তি করিতেন। স্পষ্ট বোধ হঠাত, তিনি এই সকল কবিতাব ৬াবে মগ্ন হইয়া গিয়াছেন। তিনি অতিশয় ভাবের সহিত যে সকল কবিতা উচ্চারণ করিতেন, আমি তাহা কিছুই বুঝিতে পারিতাম না। আমাব এখন বোধ হয় যে, উহাই রাজার উপাসনা ছিল। “রাজার পালিত পুত্র রাজারাম বড় দুষ্ট ছিল। রাজার সহিত অনেক প্রকার দুষ্টামি করিত। কিন্তু রাজা কিছুতেই তাহার প্রতি বিরক্ত হইতেন না । বাস্তবিক আমি এপৰ্য্যস্ত যত লোক দেখিয়াছি, রাজা রামমোহন রায়ের ন্যায় সুমিষ্ট মেজাজের লোক দেখি নাই। একদিবস মধ্যাহে আমি বাজার বাটিতে গমন করিলাম। রাজা তখন গভীর নিদ্রায় মগ্ন ।