পাতা:মহাপৃথিবী - জীবনানন্দ দাশ.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মনে হ’তে ব্ৰহ্মাণ্ডের পরিশ্রম ধুলোর কণার কাছে তবু কিছু ঋণী ; ঋণী নয় ? সময় তা বুঝে নেবে--- সেই সব বাসনার দিনগুলো ; ঘাস রোদ শিশিরের কণা তারাও জাগিয়ে গেছে আমাদের শরীরের ভিতরে কামনা সেই দিন ; ম-মর শিশুর মতো আকাজক্ষার মুখখান কী যে : ক্লাস্তি আনে, ব্যথা আনে, তবুও বিরল কিছু নিয়ে আসে নিজে ।” স্পষ্ট চোখ তুলে সে সন্ধ্যার দিকে ; কত দিন অপেক্ষার পরে আকাশের থেকে আজ শান্তি ঝরে—অবসাদ নেই আর শূন্যের ভিতরে । রাত্ৰি হ'য়ে গেলে তার উৎসারিত অন্ধকার জলের মতন কী-এক শাস্তির মতো স্নিগ্ধ হ’য়ে আছে এই মহিলার মন । হেঁটে চলি তার পাশে, আমিও বলি না কিছু, কিছুই বলে না ; প্রেম ও উদ্বেগ ছাড়া অন্য-এক স্থির আলোচনা তার মনে —আমরা অনেক দূর চ’লে গেছি প্রাস্তরের ঘাসে, দ্রোণ ফুল লেগে আছে মেরুন শাড়িতে তার—নিম-আমলকীপাত হালকা বাতাসে চুলের ওপরে উড়ে-উড়ে পড়ে–মুখে চোখে শরীরের সর্বস্বত ভীরে, কঠিন এ-সামাজিক মেয়েটিকে দ্বিতীয় প্রকৃতি মনে ক’রে । অন্ধকার থেকে খুজে কখন আমার হাত একবার কোলে তুলে নিয়ে গ’লে রেখে দিলে৷ তার : 'রোগ হ’য়ে গেছে। এত—চাপা প’ড়ে গেছে যে হারিয়ে পৃথিবীর ভিড়ে তুমি— বলে সে খিন্ন হাত ছেড়ে দিলে। ধীরে ; শান্ত যুগে—সময়ের মুখপাত্রীর মতে সেই অপূর্ব শরীরে নদী নেই—হৃদয়ে কামনা ব্যথা শেষ হ’য়ে গেছে কবে তার ; নক্ষত্রের চুরি করে নিয়ে গেছে, ফিরিয়ে দেবে না তাকে আর ।