পাতা:মহাভারতীয় বৃহৎ ভীষ্মপর্ব্ব - কাশীরাম দাস.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভীষ্মপর্ব্ব।
৩১

অন্ধকার করে না চলে বাতাস॥ দেখিয়া হাসিল ইলাবন্ত মহাবীর। রাক্ষসের বাণ কাটি রণে হৈল স্থির॥ চোক২ বাণে পুনঃ পুরিয়া সন্ধান। অলম্বুষ রাক্ষসের কাটে ধনুর্ব্বাণ॥ আর ধনু লইল রাক্ষস বীরবর। ইলাবন্ত উপরেতে বরিষয়ে শর॥ বাণে নিবারয়ে তাহা অর্জ্জুন তনয়। নিজ অস্ত্রে বিন্ধে বীর রাক্ষস হৃদয়॥ বাণাঘাতে অলম্বুষ অজ্ঞান হইল। সারথি ফিরায়ে রথ ভয়ে পলাইল॥ তবে সৈম্য সংহারয় ইলাবন্ত বীর। কৌরবের সেনাগণ সমরে অস্থির॥ সৈন্যের দুর্গতি দেখি রাজা দুর্য্যোধন। ইলাবন্ত সহ গেল করিবারে রণ॥ যেইবেগে হৈল আগে রাজা দুর্য্যোধন। ইলাবন্ত তাহার কাটিল শরাসন॥ রথধ্বজ কাটিল রথের চারি হয়। সারথির মাথাকাটি নিল যমালয়॥ বিরথী হইয়া রাজা অতিশয় রোষে। অন্য রথে আরোহিয়া নানাস্ত্র বরিষে॥ বাণে বাণ নিবারয় ইলাবন্ত বীর। বাণেতে জর্জর করে রাজার শরীর॥ রাজার সঙ্কট দেখি মত যোদ্ধাগণ। নানা অস্ত্র লইয়া ধাইল সর্ব্বজন॥ দেখিয়া ধাইল ইলাবন্ত ধনুর্দ্ধর। কাটিয়া সবার বাণ বিন্ধয়ে সত্বর॥ কাহার কাটিল ধনু কার কাটে গুণ। কাহার সারথি কাটে কার কাটে তূণ॥ নানা অস্ত্র বীরগণে করয়ে ঘাতন। অস্ত্রাঘাতে কত বীর হৈল অচেতন॥ বাণাঘাতে কত বীর গেল যমলোক। দেখি দুর্য্যোধনে বড় উপজিল শোক॥ কৌরবের সৈন্যগণ করে হাহাকার। পাণ্ডবের সেনামধ্যে আনন্দ অপার॥ সিংহ নাদ ছাড়ে ইলাবন্ত মহাবল। কৌরবের সৈন্যেতে রোদন কোলাহল॥ দ্রোণ কৃপ অশ্বত্থামা আদি বীরগণ। ইলাবন্ত শরে সবে ব্যথিত জীবন॥ কত ক্ষণে অলম্বুষ চেতন পাইয়া। দিব্য রথে চড়ি এলো সন্ধান পূরিয়া॥ মুখামুখি দুইজনে পুন যুদ্ধ হয়। দোঁহাকার বাণে দোঁহে জর্জর হৃদয়॥ তবে অলম্বুষ করি মায়ার সৃজন। শূন্যে লুকাইয়া করে বাণ বরিষণ॥ দেখি ইলাবন্ত ক্রুদ্ধ হইল প্রচুর। বাণাঘাতে রাক্ষসের মায়া করে চূর॥ মায়া দূর গেলে করে অস্ত্রের ঘাতন। দোঁহে দোঁহা বিন্ধয়