পাতা:মহাভারতীয় বৃহৎ ভীষ্মপর্ব্ব - কাশীরাম দাস.pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভীষ্মপর্ব্ব।
৩৩

বৈশ্বানর॥ রথ হস্তী অশ্ব পুড়ে হৈল ছারখার। দেখি বারুণাস্ত্র এড়ে গঙ্গার কুমার॥ মুষল ধারাতে জল হয় বরিষণ। অগ্নি সব নিমিষে হইল নির্ব্বাপণ॥ পাণ্ডবের সেনাগণ ভাসি বুলে জলে। রথ গজ আসোয়ার পদাতি বহুলে॥ অৰ্জ্জুন মারেন বাণ পবন সঞ্চার। জল উড়াইয়া সব করেন সংহার॥ পবন বেগেতে সব ধ্বজ ভাঙ্গি পড়ে। যেমন প্রলয়কালে সৃষ্টি উড়ে ঝড়ে॥ হাসি ভীষ্ম বলে শুন পার্থ ধনুর্দ্ধর। তােমার যতেক শক্তি করহ সমর॥ নিতান্ত প্রতিজ্ঞা আমি করিব পূরণ। নহিবে তোমার শক্তি করিতে বারণ॥ এত বলি সর্পবাণ এড়ে বীরবর। লক্ষ লক্ষ ফণী উঠে গগণ উপর॥ নিমিষেতে ঝড় সব করিল আহার। গর্জ্জন করিয়া ধায় পার্থে গিলিবার॥ শিখিবাণ এড়িলেন ইন্দ্রের কুমার। ধরিয়া সকল ফণি করিল আহার॥ শত২ শিখী উড়ে গগণ উপর। দেখি অন্ধকার অস্ত্র এড়ে বীরবর॥ ঘাের অন্ধকার নাহি জ্ঞান আপ্তপর। নিশা জানি শিখিগণ গেল দিগন্তর॥ মহাঅন্ধকারে সৈন্য দেখিতে না পায়। দেখিয়া ভাস্করাস্ত্র এড়েন ধনঞ্জয়॥ সূর্য্যোদয় হইল ঘুচিল অন্ধকার। উদিত দ্বিতীয় রবি দেখিল সংসার॥ দেখি গঙ্গাপুত্ত্র মহাকুপিত হইল। ধনুক টঙ্কারি আটবাণ নিক্ষেপিল॥ এমতি সে আটবাণ তীক্ষ্ণবেগে গেল। অর্জ্জুনের রথ অশ্ব জর্জ্জর হইল॥ সাত বাণ মারে আর ধ্বজার উপরে। আশী বাণে বিন্ধিলেক প্রভু গদাধরে॥ আর কুড়ি বাণ বীর এড়ে শীঘ্র হাতে। কপিধ্বজ রথচক্র পােতে মৃত্তিকাতে॥ তবে হরি অশ্বগণে করেন প্রহার। বহু কষ্টে করিলেন রথের উদ্ধার॥ দেখিয়া অর্জ্জুন ক্রোধী হয়ে অতিশয়। পঞ্চ বাণে বিন্ধিলেন ভীষ্মের হৃদয়॥ চারি বাণে চারি অশ্ব করেন সংহার। সারথির মাথা কাটিলেন যমদ্বার॥ এক বাণে ধ্বজ তার কাটেন অর্জ্জুন। করেন ভীষ্মের প্রতি বাণ বরিষণ॥ কৃষ্ণ প্রতি বলে ভীষ্ম অতি ক্রোধ করি। নিজ অশ্ব রথ এবে রক্ষা কর হরি॥ এত বলি অস্ত্র বরিষয় বীরবর। কুজ্‌ঝটীতে আচ্ছাদয়ে যেন গিরিবর॥