পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আদিপর্ব্ব।
২৯

কর্ম্ম করিয়াছে, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, ভীম প্রতিফল প্রদানার্থে অশ্বথামার পশ্চাৎ ধাবমান হইলে, তিনি ক্রোধান্ধ হইয়া মহাস্ত্র প্রয়োগ পূর্ব্বক সুভদ্রার গর্ভ বিনাশ করিয়াছেন, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, অর্জ্জুন স্বস্তি বলিয়া স্বীয় অস্ত্র দ্বারা ব্রহ্মশিরঃ[১] অস্ত্র নিবারণ করিয়াছে, এবং অশ্বত্থামা মণিরত্ন প্রদান করিয়াছেন,[২] তখন আর অমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, অশ্বত্থামা মহাস্ত্র দ্বারা উত্তরার গর্ভ নাশ করিলে, দ্বৈপায়ন ও বাসুদেব উভয়ে অশ্বত্থামাকে অভিশাপ প্রদান করিয়াছেন, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। গান্ধারীর পুত্র, পৌত্র, বন্ধু, পিতৃ, ভ্রাতৃ প্রভৃতি সমুদায় নিধন প্রাপ্ত হইয়াছে; তাহার অতি শোচনীয় অবস্থা উপস্থিত। পাণ্ডবেরা অতি দুষ্কর কার্য্য করিয়াছে ও পুনর্ব্বার অকণ্টক রাজ্য প্রাপ্ত হইয়াছে। কি কষ্ট! শুনিলাম, আমাদের তিন জন ও পাণ্ডবদিগের সাত জন, সমুদায়ে দশ জন মাত্র অবশিষ্ট আছে। এই ভয়ঙ্কর সমরে অষ্টাদশ অক্ষৌহিণী নিধন প্রাপ্ত হইয়াছে। সঞ্জয়! আমি চারি দিক অন্ধকারময় দেখিতেছি, মোহে অভিভূত হইতেছি, আমার চেতনা লোপ হইতেছে, মন বিহ্বল হইতেছে।

 উগ্রশ্রবাঃ কহিলেন, ধৃতরাষ্ট্র এইরূপ কহিয়া বহুতর বিলাপ ও পরিতাপ করিয়া নিতান্ত দুঃখিত ও মূর্চ্ছিত হইলেন। পরে


  1. ব্রহ্মতেজোময় মহাপ্রভাব অস্ত্রবিশেষ। অশ্বত্থামা অৰ্জ্জুনবধার্থে ঐ অমোঘ অস্ত্র প্রয়োগ করেন।
  2. ভীমকে আক্রোধ ও প্রসন্ন করিবার নিমিত্ত।