পাতা:মহারাষ্ট্রের জীবন-প্রভাত.pdf/২৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२२० মহারাষ্ট্র জীবন-প্রভাত বালিকা একাকী গবাক্ষপণশ্বে উপবেশন করিয়া সন্ধ্যা হইতে দ্বিপ্রহর পর্ষ্যস্ত, দ্বিপ্রহর হইতে প্রাতঃকাল পর্য্যস্ত চিস্তা করিতেন। দিবসে প্রাতঃকাল হইতে সন্ধ্য পৰ্য্যস্ত নীরবে সেই গবাক্ষ দিয়া পথপানে চাহিয়া থাকিতেন, সে পথ দিয়া রঘুনাথ আর আসিলেন না ! কখন বা অপরাহ্লে একাকী সরযু আম্র-কাননে ভ্রমণ করিতেন, ভ্রমণ করিতে করিতে কত কথা হৃদয়ে জাগরিত হইত। তোরণদুর্গের কথা, কণ্ঠমালার কথা, রায়গড়ে আগমনের কথা, বিদায়ের কথা । নীরবে সরযুর গণ্ডস্থল দিয়া এক এক বিন্দু অশ্রু বহিত, কখন কখন রজনীতে সহস। হৃদয়ের দ্বার উদঘাটিত হুইত, ভাদ্রমাসের নদীর ন্তায় শোকপারাবার উথলিখা উঠিত। তখন কেহ দেখিবার নাই, সরযু প্রাণভরে কাদিতেন, শ্রাবণ মাসের ধারার স্তায় নয়ন হইতে অজস্র বারিধারা বহিতে থাকিত। রজনী প্রভাত হইত, প্রাতঃকালের রক্তিমছটা পূৰ্ব্বদিকে দেখা দিত। বালিকা তখনও শোকে বিবশী হইয়া লুষ্ঠিত রহিয়াছে। প্রাতঃকালে পুপচয়ন করিতে উদ্যানে যাইতেন, প্রফুল্প পুপগুলি একে একে চয়ন করিতেন, হৃদয়ে স্থাপন করিতেন, আর কি চিস্তা করিতেন, কে বলিবে ? চিস্ত করিতে করিতে পুনরায় পুষ্পের দিকে চাহিতেন, পুপদলগত প্রাতঃশিশিরবিন্দুর সহিত দুই একটি পরিষ্কার স্বচ্ছ অশ্রুবিন্দু মিশাইয়া যাইত। সায়ংকালে ধীণ হস্তে করিয়া কখন কখন গীত গাইতেন, আহা ! সে শোকের গীত শুনিয়া শ্রোতৃদিগের নয়নেও জল আলিত। এরূপ চিস্তায় ক্রমে সরযুর শরীর শুষ্ক হইতে লাগিল, মুখমণ্ডল পাণ্ডুবৰ্ণ ধারণ করিল, নয়ন কালিমাবেষ্টিত হইল। সরলস্বভাব জনাৰ্দ্দন এখনও সরযুর হৃদয়ের কথা কিছু জানেন না, কিন্তু সরযুর শরীরের অবস্থা দেখিয়া যৎপরোনাস্তি চিস্তিত হইলেন, কারণ অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন ।