হয় জীবনের বড় একটা উত্তেজক ঘটনা যেন শেষ হয়ে গেল। কিছুক্ষণ মনটা অধীর হয়ে থাকে, ফাঁকা ফাঁকা লাগে।
খেলার শেষে পথুর সঙ্গে নাগ চায়ের দোকানে চ খেতে গেল। চা তার ভাল লাগে না, খাওয়ার পর মুখটা কেমন বিস্বাদ হয়ে থাকে। কিন্তু রূপার দাদা পঞ্চর নিমন্ত্রণ তো রক্ষা-করা চাই। প্যাকিংকেসের কাঠ জোড়া দেওয়া টেবিলে রঙচটা নোঙর কাপে ফুটন্ত চা দিয়ে যায়, নাগা জিজ্ঞাসা করে, “বাড়ীতে গেছিল্লা নাকি আর?”
‘গেছিলাম। রূপার বিয়া জান না, তোমাগো পরাশার লগে?”
“কবে বিয়া?”
‘শাওন মাসের সাত তারিখ। দেরি নাই বেশী।”
গরম চায়ে চুমুক দিতে গিয়ে নাগার মুখ পুড়ে যায়। পঞ্চু হেসে বলে, “আরো মরদ, চা খাওন শেখো নাই?”
‘পরশ টাকা দিছে, একশ টাকা?”
“হ, দিছে। কই যে টাকা পাইল ছোকরা! বড় কর্তা দিছে সন্দ” করি, বড়কর্তার লগে বড় খাতির পরাশার। তোমরা গেছিলা কই?”
“ঘুইরা বেড়াইতেছিলাম নানান খানে।”
“হ, ছোট কর্তার বেড়ানের শখ চিরডা কাল। আগে যাইতেন নাও লিয়া, অখন আবার লঞ্চ কিনছেন। কতদূর গেছিলা? সারপুতা? কও কি সারপুতা তো এইখানে না!”
নাগার কথা বলতে ভাল লাগছিল না, কিন্তু পঞ্চর কথার কামাই নেই। মানুষের সঙ্গে ভাব করার তার আশ্চর্য ক্ষমতা আছে, এক কথা শেষ না করেই আরেক কথা পাড়ে, কথার মাঝখানে চায়ের সঙ্গে খাবার জন্য বিস্কুট কিনে দেয় নাগাকে, নিজে সে যে কত দুঃখী সে কথা বলে আর মাঝে মাঝে দুটি একটি কথা জেনে নেয় লঞ্চে ঘুরে বেড়ানো সম্বন্ধে।
হঠাৎ সে চিন্তিত মুখে বলে, “কি হইছে তোমার, মুখ খ্যান ভার দেখি? নাগা বলে, “না, কিছু হয় নাই।” চায়ের দোকানের বাইরে এসে পঞ্চ নাগাকে একটি অনুরোধ জানাল।