এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মানসী
১০৫
পত্রের প্রত্যাশা
চিঠি কই! দিন গেল, বইগুলো ছুঁড়ে ফেলো,
আর তো লাগে না ভালো ছাইপাঁশ পড়া।
মিটায়ে মনের খেদ গেঁথে গেছে অবিচ্ছেদ
পরিচ্ছেদে পরিচ্ছেদ মিছে মন-গড়া।
কাননপ্রান্তের কাছে ছায়া পড়ে গাছে গাছে,
ম্লান আলো শুয়ে আছে বালুকার তীরে।
বায়ু উঠে ঢেউ তুলি, টলমল পড়ে দুলি
কূলে-বাঁধা নৌকাগুলি জাহ্নবীর নীরে।
চিঠি কই! হেথা এসে একা বসে দুর দেশে
কী পড়িব দিনশেষে সন্ধ্যার আলোকে!
গোধূলির ছায়াতলে কে বলো গো মায়াবলে
সেই মুখ অশ্রুজলে এঁকে দেবে চোখে।
গভীর গুঞ্জনস্বনে ঝিল্লিরব উঠে বনে,
কে মিশাবে তারি সনে স্মৃতিকণ্ঠস্বর!
তীরতরুছায়ে-ছায়ে কোমল সন্ধ্যার বায়ে
কে আনিয়া দিবে গায়ে সুকোমল কর।
পাখি তরুশিয়ে আসে দূর হতে নীড়ে আসে,
তরীগুলি তীরে আসে, ফিরে আসে সবে—
তার সেই স্নেহস্বর ভেদি দূর-দূরান্তর
কেন এ কোলের ’পর আসে না নীরবে!