পাতা:মানসী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

ভূমিকা

প্রথম সংস্করণ

এই গ্রন্থের অনেকগুলি কবিতায় যুক্তাক্ষরকে দুই-অক্ষর-স্বরূপ গণ্য করা হইয়াছে। সেরূপ স্থলে সংস্কৃত ছন্দের নিয়মানুসারে যুক্তাক্ষরকে দীর্ঘ করিয়া না পড়িলে ছন্দ রক্ষা করা অসম্ভব হইবে। যথা-

নিম্নে যমুনা বহে স্বচ্ছ শীতল;
উর্ধ্বে পাষাণতট, শ্যাম শিলাতল।

‘নিম্নে’ ‘স্বচ্ছ’ এবং ‘উর্ধ্বে এই কয়েকটি শব্দে তিন মাত্রা গণনা না করিলে পয়ার ছন্দ থাকে না। আমার বিশ্বাস, যুক্তাক্ষরকে দুই-অক্ষর-স্বরূপ গণনা করাই স্বাভাবিক এবং তাহাতে ছন্দের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, কেবল বাঙ্গালা ছন্দ পাঠ করিয়া বিকৃত অভ্যাস হওয়াতেই সহসা তাহা দুঃসাধ্য মনে হইতে পারে। শব্দের আরম্ভ অক্ষর-যুক্ত হইলেও তাহাকে যুক্তাক্ষর-স্বরূপে গণনা করা যায় নাই- পাঠকেরা এইরূপ আরো দুই-একটি ব্যতিক্রম দেখিতে পাইবেন।

 গ্রন্থের আরম্ভভাগের কতকগুলি কবিতা ব্যতীত অবশিষ্ট সমস্ত কবিতাই রচনাকালের পর্যায়-অনুসারে শ্রেণীবদ্ধ হইয়াছে।

 ‘শেষ উপহার’ -নামক কবিতাটি আমার কোনো বন্ধুর রচিত এক ইংরাজি কবিতা অবলম্বন করিয়া রচনা করিয়াছি। মূল কবিতাটি এইখানে উদধৃত করিবার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু আমার বন্ধু সম্প্রতি সুদূর প্রবাসে থাকা-প্রযুক্ত তাহা পারিলাম না।

গ্রন্থকার