পত্র
বাসস্থান-পরিবর্তন উপলক্ষে
শ্রীশচন্দ্র মজুমদারকে লিখিত
বন্ধুবর,
দক্ষিণে বেঁধেছি নীড়, চুকেছে লোকের ভিড়,
বকুনির বিড়বিড় গেছে থেমে-থুমে।
আপনারে করে জড়ো কোণে বসে আছি দড়ো,
আর সাধ নেই বড়ো আকাশকুসুমে।
সুখ নেই, আছে শান্তি— ঘুচেছে মনের ভ্রান্তি,
‘বিমুখা বান্ধবা যাস্তি’ বুঝিয়াছি সার।
কাছে থেকে কাটে সুখে গল্প ও গুড়ুক ফুঁকে,
গেলে দক্ষিণের মুখে দেখা নেই আর।
কাজ কী এ মিছে নাট, তুলেছি দোকানপাট,
গোলমাল চণ্ডীপাঠ আছি ভাই ভুলি।
তবু কেন খিটিমিটি, মাঝে মাঝে কড়া চিঠি,
থেকে থেকে দু-চারিটি চোখা চোখা বুলি?
‘পেটে খেলে পিঠে সয়’ এই তো প্রবাদে কয়—
ভুলে যদি দেখা হয় তবু সয়ে থাকি।
হাত করে নিশপিশ, মাঝে রেখে পোস্টাপিস
ছাড় শুধু দশ-বিশ শব্দভেদী ফাঁকি।
বিষম উৎপাত এ কী! হায় নারদের ঢেঁকি,
শেষকালে এ যে দেখি ঝগড়ার মতো।
মেলা কথা হল জমা, এইখানে দিই কমা—
আমার স্বভাব ক্ষমা, নির্বিবাদ ব্রত।