পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

)金や পর বাবু বলিল, ‘এবার তুমি বিশ্ৰাম কর। ওস্তাদজী, আপনি এবার মেহেরবানি করুন। তবে ? ওস্তাদ এবার একটু হাসিয়া মাথাটি সামনের দিকে সামান্য নিচু করিল। -‘সোজা সুরের একটা বাংলা গান গাই ? ‘বলেন কি ওস্তাদজী, আপনি বাংলা গান জানেন ?? সিগারেটের ধোয় না। ছাড়িয়াই সবিস্ময়ে কথাটা বলিয়া বাবুর এক বন্ধু কাসিতে লাগিল। সুভদ্ৰা মৃদুস্বরে বলিল, “জল খান, দু’ঢোক জল খেলেই সেরে যাবে।” বন্ধুর কাসি থামিলে ওস্তাদ বলিল, “জানি। কিনা সে ত মালুম হবে শুনলে ?” ঠুংরীতে হাফেজের বাংলা ভাবাৰ্থ অনুবাদ। শুনিতে শুনিতে সুভদ্রার মনে হয়, ওস্তাদের অমন সুন্দর ফুলকাটা পাঞ্জাবির তিন চার জায়গা ছেড়া কেন ? আরও শুনিতে শুনিতে মনে হয় যে পাতলা পাঞ্জাবি, ছুচ-সুতায় সে কি ছেডোগুলি রিফু করিয়া দিতে পরিবে ? গান শেষ হইলে তার মনে পডে, রিফুর কাজ সে জানে না, যাত্রার দলে যে ছেলেটি তার রাধা সাজিত সেই যেন কোথা হইতে খুব ভাল রিফুর কাজ শিখিয়াছিল। ওস্তাদ সুভদ্রাকে জিজ্ঞাসা করিল, “কেমন লাগল ?” সুভদ্ৰা নিবিবাদে বলিল, “আরেকটা শুনি ? ওস্তাদের কয়েকটি গান শুনিয়া সকাল সকাল সুভদ্রা বাডি ফিরিয়া গেল । বেশ বুঝা গেল, তার গানও বাবুর পছন্দ হয় নাই, তাকেও পছন্দ হয় নাই। পরদিন ঘোড়ার গাড়ি চাপিয়া ওস্তাদ সুভদ্রার বাড়ি আসিল । জিজ্ঞাসা করিল, ‘সুভদ্ৰা গান শিখিবে কি, গান ? ভাল ভাল গান ? সেই ফুলকাটা জামা পায়জামা পরিয়াই ওস্তাদ আজ আমিয়াছে, মাথায় শুধু আজ একটি জরি বসানো টুপি, আর চোখের কাজল আরও একটু স্পষ্ট। সুৰ্মা নয়, কাজল। কালিদাসীর ছেলের কাজল-পরা চোখের মতই আশ্চৰ্যরকম কচি কচি দেখাইতেছে ওস্তাদের abite দেখিয়াই সাধন একটা কুৎসিত প্রশ্ন করিল, “নটবরের বাবু বুঝি গান শিখাইতে পাঠাইয়াছে ওস্তাদকে ?” ওস্তাদ বলিল, “তোবা তোবা, নটবরের বাবু আমার কে ?” জগতে এমন বড়লোক কে আছে যে ওস্তাদকে মানিবের মত হুকুম দিবে ? বাবুত শুধু তার সাকরেদ, ওস্তাদের বাড়িতে যে দু’চারজন গান শিখিতে আসে। o f corte o