পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/১৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S\9R রাঘব মালাকার দায়ী হবে ওরাই। পুলিসও প্ৰমাণ খুজিবে না, জমিদার কার্তিক চক্রবর্তীও নয় -দু’পক্ষের শাসনে থেতো হয়ে যাবে ওরা, পুড়ে ছাই হয়ে যাবে তাদের কুঁড়েগুলি, বাতিল হয়ে যাবে আশেপাশে বাস করার অনুমতি । একবার সদরে টাকা নিয়ে যাচ্ছিল গোমস্তা রাধাচরণ, সঙ্গে ছিল দু’জন পাইক । জন সাতেক লোক তাদের মারধোর করে টাকা কেড়ে নিয়ে যায়। পরে তারা ধরা পডে জেলে গিয়েছিল, ফুলবাড়ির পাঁচজন আর মালদিয়ার দু’জন-পরে। দু’দিকের চাপে রাঘবের আর কাছাকাছি আরও তিন চারটে বন্তি গায়ের মানুষেরা থেতো হয়ে যাবার পরে। পথ থেকে হঁক এলে এরা সাড়া দেয় । ভীরু লোক দাবি করলে সঙ্গে পৌছেও দিয়ে আসে এদিকে ফুলবাড়ি বা ওদিকে সড়কের মোড় পর্যন্ত। একলা ভীরু পথিকের ভালোমিন্দের দাযিক ওরাই কিনা । শেষ বেলাষ ফুলবাডি-মালদিয়া নামমাত্র পথ ধরে বেঁচেকা মাথায় দু’জন লোক চলেছে মালদিয়ার দিকে। বেশভূষা বেঁচেকার আকার, বয়স, আর গায়েব রঙ ছাড়া দু’জনের মধ্যে পার্থক্য বেশী নেই-অর্থাৎ, লম্বায় চওডায় দু’জনেই প্ৰায় সমান হবে। গায়ের জোরে কিনা বলা অসম্ভব, জোরের পরীক্ষা কখনো হয়নি। রাঘব মালাকরের কোমরে এক হাত একটি গামছা জড়ানো, জ্যালিজেলে পুরনো গামছা । গৌতম দাসের পরনে প্ৰমাণসাইজ ঘরে-কাচা আধপুরনো মিলের ধুতি, গায়ে পুরনো ছিটের সার্ট, ঘাডের কাছে একটু ছিডেছে। পায়ে ক্যান্বিসের জুতো। রাঘবের বেঁচকাটা বেশ বড়, গৌতমের বেঁাচক তার সিকির চেয়ে ছোট ইত্ত্বে। রাঘবের আছােটা চুলে পাক ধরেছে, গৌতমের ছাটা চুলেও তাই, তবে রাঘব পনরো বিশ বছরের বড় হবে গৌতমের চেয়ে। রাঘব মিশকালো, গৌতম মেটে। খানদশেক কুঁড়ের নামহীন গায়ের কাছে এসে একটু হাঁপ ধরে রাঘবের। গতবারের চেয়ে এবারের বোঝাটা বেশী ভারী। দু’চার মিনিটের জন্য বোঝাটা একটু সে নামিয়ে রাখে। গৌতম বলে, “আবার নামালি ? আজি তোর হয়েছে কি র্যা ? “ডবল বোঝা ঘাড়ে চাপিয়ে বলছ ? আঙুল দিয়ে কপালের ঘাম চেচে এনে ঝেড়ে ফেলে রাঘব বলে, “বাপস! কাপড়ের এত ওজন হয় জানতাম না বাপু ! এত কাপড় জন্মে দেখিনি দোকান ছাড়া।” e afiș soţiţi o