পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/২০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

डिकूक SSS দেহে যেমন জীবন ফিরিয়া আসে এবং কাছে আগাইয়া আসিলে গায়ে পাঞ্জাবি, কঁধে চাদর আর পায়ে জুতা দেখিয়া ফিরিয়া আসে চিন্তা করার ক্ষমতা। “মশায় যাবেন কোথা ? “সোদপুর।” যাদবের শ্বশুরবাড়ির গ্রামের কাছেই সোদপুর গ্রাম। শরীর মন যেন যাদবের হাল্কা হইয়া যায়। নিশ্চিন্ত মনে সে সঙ্গে সঙ্গে হাটতে আরম্ভ করে। যাদব যে তার দিকেই আগাইয়া চলিতেছিল। হঠাৎ দিক পরিবর্তন করিয়াছে এটা আগন্তুকের কাছে ধরা পড়ে নাই, গতিবেগ খানিকটা কমাইয়া সে বলে, “একটু আস্তে হাটি, নয়ত আপনার কষ্ট হবে।’ যাদব সবিনয়ে বলে, “আজ্ঞে না, কষ্ট কিসের ?” “পিছন থেকে এসে ধরে ফেললাম, একটু আস্তে হঁটেন। বইকি আপনি।” কথা আর গলার সুর শুনিয়া মনে হয়, অপরিচয়ের ব্যবধানটা পুরাপুরিই আছে বটে। তবু যেন তারা পরস্পরের আপনি জন, পরমাত্মীয়। তাই স্বাভাবিক, মানুষ যখন মানুষকে শুধু মানুষ হিসাবে গ্রহণ করিতে পারে তখন আর তারা অনাত্মীয় থাকিবে কেন ? প্ৰান্তরবাহী এই পথের বুকে যে বিচ্ছিন্ন ও অসাধারণ জগতে তাদের সাক্ষাৎ হইয়াছে, সেখানে একজনের কাছে অন্যজন শুধু মানুষ। কিন্তু জীবনের সাধারণ অসাধারণ বাস্তব অবাস্তব সমস্ত আবেষ্টনীর মধ্যেই ভয় আর সন্দেহ যার জীবনকে শুধু খাপছাড়া যাতনাভোগে নেশায় ভরিয়া রাখিয়াছে, তার মন কেন বেশীক্ষণ সঙ্গীলাভের স্বাভাবিক নিশ্চিন্ত ভাব আর মানুষকে মানুষ মনে করার সহজ বুদ্ধি বজায় রাখিতে পারিবে ? কোথা হইতে আসিতেছে আর কোথায় যাইবে এই চিরন্তন ধরা-বাধা প্রশ্নের পর সঙ্গী যখন জিজ্ঞাসা করিয়া বসে, শহরে সে করে কি, যাদবের মনে একটা খটকা লাগে । সত্য কথাটা বলা কি উচিত হইবে, শহরে সে চাকরি করে, গত এগার মাস ধরিয়া মাসে মাসে নিয়মিত বেতন পাইয়াছে ? গায়ে পাঞ্জাবি থাক, কঁধে চাদর থাক, পায়ে জুতা থাক, মানুষটা আসলে কেমন, তাত আর সে জানে না । বাহিরের পোশাকে ভিতরের পরিচয় আর কবে জানা গিয়াছে মানুষের ? সে শহরের চাকুরে-বাবু, এ খবরটা শুনিয়া যদি লোভ জাগে মানুষটার, অতি সহজে কিছু রোজগার করার এমন একটা সুযোগ পাইয়া যদি আত্মসংবরণ করিতে ow-fifty to